বৈরী আবহাওয়ায় সরিষা চাষে ক্ষতির আশঙ্কায় নেত্রকোনার কৃষকরা

জমিতে সরিষার ফলন হালকা অকাল বন্যা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর কোনও ফসলের আবাদই হাসি ফোটাতে পারেনি নেত্রকোনার কৃষকদের মুখে। গত বছরের বন্যায় জেলার অধিকাংশ বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপর বন্যার পানি নামতে দেরি হওয়ায় জমিতে রবিশষ্যের বীজ ফেলতেও সময় লেগেছে। ঠিক সময়ে সরিষার বীজ ফেলতে না পারায় এবার ফলনেও মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। আবার কুয়াশার কারণে ফলনও হালকা। সরিষার ফলন আশানুরূপ না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন নেত্রকোনার কৃষকরা।

তবে কৃষি অফিসের দাবি, গত বছরের তুলনায় এবার আবাদ কম হলেও ভাল ফলন পাবে চাষিরা। গত বছর নেত্রকোনায় সরিষার আবাদ হয় ৬ হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে। কিন্তু এ বছরের বন্যার পানি নামতে দেরি হওয়া সরিষার আবাদ করা হয় ৪ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে।

কৃষকরা জানায়, আবাদের লক্ষমাত্রা কম থাকলেও তীব্র শীতের কারণে সে ফলনও ভালো হয়নি। ফলে টানা দু’বারের ফসলহানির পর আগামি বোরো আবাদ নিয়েও শঙ্কায় পড়েছেন কৃষকরা।

তীব্র শীতে সরিষার ফলন কম কলমাকান্দা উপজেলার গুতুরাগ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘গত বছরটা শুধু কৃষকদের জন্য মাইর আর মাইর (ক্ষতি আর ক্ষতি)। ফলে কিভাবে যে ছেলে-মেয়ে নিয়ে দিন কাটাইতাছি সেটা একমাত্র আল্লাহ ভাল জানেন। দু’বার ধানের ফসলের ক্ষতি হওয়ার পর অনেক আশায় ক্ষেতে সরিষা দিছিলাম কিন্তু তারও ফলন বেশি ভাল হয়নি। খুব দুশ্চিন্তায় কাটতাছে দিনকাল।’

মোহনগঞ্জের কৃষক খোকন বলেন, ‘এবার বন্যার পানি দেরিতে নামা ও তীব্র শীতের কারণে ফলনে বেশ ক্ষতি হইছে, যে খরচ করা হইছে তাও উঠবে কিনা সন্দেহ আছে।’

তবে কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার সরিষা চাষ কম হলেও কৃষকদের নানা ভাবে পরার্মশ দেওয়া হয়েছে। দেশী জাত টরি সেভেনের পরিবর্তে হাইব্রিড বারি ১৪ জাতের বীজ দেওয়া হয়েছে- যাতে করে কৃষকদের সরিষা ফলন ভালো হয়।

নেত্রকোনা খামার বাড়ির উপ-পরিচালক বিলাশ চন্দ্র পাল বলেন, ‘তেমন কোনও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে না কৃষকদের। যাতে করে কৃষক ভাইয়েরা ভাল ফসল পান সেজন্য কৃষি কর্মকর্তারা নানা ভাবে কৃষকদের পরার্মশ দিচ্ছেন।’