ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি বিকল, ঘাটে আটকা ৫ শতাধিক যানবাহন

ইলিশা ঘাটে আটকা পড়া যানবাহনের দীর্ঘ সারিভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি ‘কৃষাণী’ দুই দিন ধরে বিকল থাকায় ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে মালবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। রুটের অন্য প্রান্তের অবস্থাও একই। এতে দুই ঘাটে আটকা পড়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক যানবাহন। ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, ফেরিটি সচল হতে দুই-তিন দিন লাগবে।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুট। জানা গেছে, এই রুটে কলমীলতা, কৃষাণী ও কনকচাঁপা নামের তিনটি ফেরি নিয়মিত চলাচল করছিল। কিন্তু ফেরি কৃষাণী গত দুই দিন ধরে বিকল পড়ে আছে। এতে যানবাহন পারাপারে স্বাভাবিক গতি ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিকাল পর্যন্ত ফেরিঘাটে তিন শতাধিক যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। এর অধিকাংশই ছিল পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস। রাস্তার একপাশে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে এসব যানবাহন। ঘাটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষমাণ থাকায় অনেক ট্রাকে থাকা কাঁচামাল পচে যাচ্ছে বলে জানান ট্রাকচালকরা। তারা বলছেন, হেলপারদের নিয়ে তারা পাঁচ-ছয় দিন ধরে ইলিশা ফেরিঘাটে অলস সময় কাটাচ্ছেন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
ইলিশা ফেরিঘাটে অপেক্ষমাণ ট্রাকচালক মো. নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী নিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফেনী থেকে ভোলার বোরহানউদ্দিনে এসেছিলাম। ফেরির দেখা না মেলায় এখনও ইলিশা ফেরিঘাটেই আছি।’
ভোলা সদর উপজেলার ট্রাকচালক রুৎফর রহমান জানান, দৌলতখান উপজেলা থেকে ভাঙা টিন নিয়ে ফেনীর পথে রওনা দিয়েছিলেন গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিকালে। ফেরি সংকটের কারণে চার দিন ধরে ইলিশা ফেরিঘাটে আটকা পড়েছেন।
ট্রাকচাল রফিকুল ইসলামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও। তিনি জানান, ঠাকুরগাঁও থেকে আলু নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি বোরহানউদ্দিন ও লালমোহনে এসেছিলেন। কিন্তু ফেরির অপেক্ষায় ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই ফেরিঘাটে অবস্থান করছেন। তাদের মতো আরও তিন শতাধিক পরিবহন শ্রমিক এখন ইলিশা ফেরিঘাটে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছেন।
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, এই রুটে স্বাভাবিক চলাচলের জন্য এমনিতেই কমপক্ষে চারটি ফেরি প্রয়োজন। কিন্তু রয়েছে তিনটি। এর মধ্যে আবার একটি ফেরি বিকল হয়ে পড়ায় দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
ইলিশা ফেরিঘাটের ইনচার্জ, ব্যবস্থাপক এমরান খাঁন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই রুটে তিনটি ফেরি নিয়মিত চলাচল করছিল। কিন্তু গত দুই দিন আগে ফেরি কৃষাণী বিকল হয়ে পড়ে। তাই ভোলা ও লক্ষ্মীপুর এলাকার দুই পাড়ে বহু যানবাহন আটকা পড়েছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে ফেরিটি সচল হয়ে গেলে যানজট কিছুটা কমে যাবে।’ এ রুটে কমপক্ষে চারটি ফেরির প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনিও।
আরও পড়ুন-
বরিশালে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও যুবদলের প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশি বাধা