মির্জা শাহজাহান টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার একঢালা গ্রামের মৃত মির্জা হানিফ উদ্দিনে ছেলে। বর্তমানে তিনি টাঙ্গাইল শহরের থানাপাড়া এলাকায় বসবাস করছেন।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রূপা হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির মধ্যে ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫), জাহাঙ্গীর (১৯), চালক হাবিবুরকে (৪৫) ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। অন্য আসামি ওই পরিবহনের সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া। সেইসঙ্গে সফর আলীকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এ অর্থ নিহত রূপার পরিবারকে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও অপরাধ সংঘটনের কাজে ব্যবহৃত ছোঁয়া পরিবহনের ওই বাসটি ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিহতের পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাত্র ১৪ কর্মদিবসের মধ্যে মামলার রায় হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন মির্জা শাহজাহান। তবে দৌড় থামাননি তিনি। রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত দৌড়াবেন বলে জানান মির্জা শাহজাহান। এছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে ধূমপানের বিরুদ্ধে জনমত গঠনেও দৌড়ে যাচ্ছেন। আমৃত্যু এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবেন বলেও জানান তিনি।
গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে জাকিয়া সুলতানা রূপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে পরিবহণ শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ রাতে মরদেহটি উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করেন। গত ১৫ অক্টোবর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে ৫ আসামির বিরূদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ২৫ অক্টোবর আদালত এ অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর, চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা প্রত্যেকেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আসামিরা টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছে।