জামিন পেলেন ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র সংগ্রহকারী ১১ শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম

ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া চট্টগ্রাম আইডিয়াল স্কুলের পটিয়া শাখার ৯ শিক্ষার্থীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর শিশু আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস এ জামিন মঞ্জুর করেন। রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত আইনজীবী (পিপি) এমএ ফয়েজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পিপি এমএ ফয়েজ আরও জানান, এদিন একই আদালত ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র সংগ্রহের অভিযোগে চট্টগ্রাম পুলিশ লাইন্স স্কুলকেন্দ্র থেকে গ্রেফতার হওয়া অন্য দুই পরীক্ষার্থীকেও জামিন দেন।

জামিন পাওয়া ১১ শিক্ষার্থী হলেন– নুরুল ইসলাম, জাহেদুল আলম, মো. ফয়সাল, সাখাওয়াত রিয়াজ, রোবায়েত হাসান চৌধুরী, আসিসু রহমান, আরফাতুল ইসলাম, মুনতাহেনা সাইফা, উম্মে হাবিবা সাদিয়া, চেশমা শাহী ও সিরাজান মুনিরা। এর মধ্যে প্রথম ৯ জন চট্টগ্রাম আইডিয়াল স্কুলের পটিয়া শাখার শিক্ষার্থী। বাকি দুই জন বাংলাদেশ মহিলা সমিতি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী।

পিপি এমএ ফয়েজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার হওয়া এক শিক্ষিকাসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত ১১ শিক্ষার্থীকে জামিন দেন। তবে শিক্ষিকা কহিনুর আক্তারের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত দেননি আদালত। আগামীকাল বৃহস্পতিবার কহিনুর আক্তারের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।’

আদালত সূত্র জানায়, মামলা দায়েরের পর আজ দুপুরে থানা থেকে প্রিজন ভ্যানে করে ১১ শিক্ষার্থীকে আদালতে আনা হয়। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ১১ শিক্ষার্থীকে মহানগর শিশু আদালতে তোলা হয়। রিমান্ডে নেওয়ার জন্য পুলিশ শুনানিতে ১১ শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোনে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র পাওয়ার কথা আদালতকে জানায়। এসময় আসামিদের আইনজীবীরা পুলিশের বক্তব্যের বিরোধিতা করে শিক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেন। আসামিদের আইনজীবীরা আরও দাবি করেন, শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের মামলা করে রিমান্ডে নেওয়া উচিত। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ রয়েছে। পরে শুনানিতে উপস্থিত ৫০-৬০ জন আইনজীবী একলাখ টাকা জামিননামায় সই করে ১১ শিক্ষার্থীর জামিন আবেদন চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ৯টার দিকে নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের সামনে অপেক্ষমান শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোরাদ আলী শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনে পদার্থ বিজ্ঞানের ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র পান। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ওই প্রশ্নের মিল পাওয়ায় পরীক্ষা শেষে ওই বাসে থাকা চট্টগ্রাম আইডিয়াল স্কুলের বিজ্ঞান শাখার ২৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করে প্রশাসন। এসময় মোবাইল ফোনে প্রশ্নপত্র পাওয়া ৭ শিক্ষার্থীসহ ৯ পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্যদিকে, একই দিন চট্টগ্রাম নগরীর পুলিশ লাইন্স কেন্দ্রে মোবাইল ফোনে উত্তরপত্র দেখানোর সময় দুই পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের বাবার মোবাইল ফোনে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। পরে বুধবার সকালে আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্নপত্র পাওয়ার ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালী থানায় এবং পুলিশ লাইন্স কেন্দ্র থেকে আটক ওই দুই শিক্ষার্থীর নামে খুলশী থানায় মামলা দায়ের করা হয়।