উদ্বোধনের অপেক্ষায় কুষ্টিয়ার কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র

ভেড়ামারার কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টকুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ৪৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম দু’টি টারবাইন এখন প্রস্তুত। দুই টারবাইনের মধ্যে গ্যাস টারবাইনে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে ৩০০ মেগাওয়াট, স্টিম টারবাইনে ১৪০ মেগাওয়াট। কম্বাইন্ড সাইকেল এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে ৪১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। নির্মাণ কাজ শেষে এই কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এখন রয়েছে উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
অব্যাহত বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবিলায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ভেড়ামারায় দেশের বৃহত্তম তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও লালন শাহ সংযোগ সড়ক সেতুর পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে এই প্ল্যান্ট। আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি করেছে জাপানের মারুবেনি করপোরেশন।
৪৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম এই বিদ্যুৎকেন্দ্রচার হাজার ১০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের জুলাইয়ে। কাজ শেষে এর তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডকে। দুই হাজার ৭৮৬টি শক্তিশালী পাইলিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এ প্ল্যান্টে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি গ্যাস ইউনিট, একটি স্টিম টারবাইন ও একটি এইচআরসিজি স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ৪৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলেও ৪৭২ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে এই প্ল্যান্টের।
২০১৭ সালের ৩১ মার্চ পরীক্ষামূলক উৎপাদন ‍শুরু হয় কম্বাইন্ড সাইকেল এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে। ওই সময় শুধু গ্যাস টারবাইনে ২৮৭.৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। পরে তা ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়। পরে একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর গ্যাস টারবাইনের মাধ্যমে আরও ১৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের উৎপাদন শুরু হয়। এরপর থেকে বাণিজ্যিকভাবে ৪১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে এই প্ল্যান্ট থেকে। গ্যাস দিয়ে প্ল্যান্টটি চালানো হবে বলে এখান থেকে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে ব্যয় মাত্র ১ টাকা ৮৯ পয়সা।
বিদ্যুৎকেন্দ্রে রয়েছে একটি গ্যাস টারবাইন, একটি স্টিম টারবাইনকুষ্টিয়ার ভেড়ামারা কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদ হালিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাণিজ্যিকভাবে ৪১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। বর্তমানে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের প্রকৌশলীদের নিরলস প্রচেষ্টায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহারে সর্বনিম্ন মূল্যে উৎপাদিত বিদ্যুৎ এ অঞ্চলের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে মনে করছেন তিনি।
আসাদ হালিম জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবকিছুই প্রস্তুত। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।
তবে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের সরবরাহ না পাওয়ার কথা জানিয়ে প্ল্যান্টের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও প্ল্যান্ট ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী আমরা গ্যাস পাচ্ছি না। প্ল্যান্টে ৪১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে প্রতিদিন গ্যাস প্রয়োজন ৬৫ এমএমসিএফটি। কিন্তু আমরা পাচ্ছি ৩০ থেকে ৩৫ এমএমসিএফটি। এ কারণে উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবে প্রয়োজনীয় গ্যাসের সরবরাহ পেলে এই প্ল্যান্টে সর্বোচ্চ ৪৭২ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন-
শাবি ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মী বহিষ্কার
৯৫টি শহরকে পেছনে ফেলে সেরা হিসেবে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা