নওগাঁয় কালোজিরা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

কালোজিরা ক্ষেত (ছবি-সংগৃহীত)

নওগাঁ জেলার রাণীনগরে এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হচ্ছে দামি মসলা জাতীয় ফসল কালোজিরা।ব্যয়বহুল এই মসলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে উপজেলার কৃষকদের। কালোজিরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ভীষণ অপরিহার্য। এটা শুধু মসলা জাতীয় ফসলই নয়—সব রোগের মহৌষধ হিসেবেও খ্যাতি আছে কালোজিরার। এবারের মৌসুমে উপজেলার চকমনু গ্রামে কালোজিরার পরীক্ষামূলক চাষ করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কৃষক লিটন খন্দকার।

সফল চাষী হিসেবে পরিচিত লিটন খন্দকারের বাবা উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের চকমনু গ্রামের খন্দকার মো. নাজিম উদ্দিন। লিটন খন্দকার জানান, ‘নিয়মিত ফসল চাষের একঘেয়েমি থেকে পরিবর্তন আনার জন্যই মূলত তিনি মসলা জাতীয় ফসল চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কম খরচে বেশি লাভের আশায় উপজেলায় তিনিই প্রথম কালোজিরার চাষ শুরু করেছেন। তিনি আশা করেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কাটা-মাড়াই শেষ করে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন এই দামি ফসল।

লিটন খন্দকার পরীক্ষামূলকভাবে চলতি মৌসুমে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে কালোজিরার চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় কালোজিরা চাষে সফল হয়েছেন বলে জানান তিনি।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে কালোজিরা ফসলের চাষাবাদ নেই বললেই চলে। আয়ুর্বেদী, ইউনানি ও কবিরাজি চিকিৎসায় কালোজিরা ও কালোজিরার তেল  ব্যবহারের ব্যাপক প্রচলন আছে। আদিকাল থেকে ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস ও ক্যারোটিন সমৃদ্ধ কালোজিরা বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

অগ্রহায়ণ মাসের শেষদিকে কালোজিরার বীজ বপন করতে হয়। এরপর তিন মাসের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়। সমতল, বেলে, দোঁআশ মাটিতে কালোজিরা ভালো হয়। চাষ, বীজ, সার ও পানি বাবদ বিঘাপ্রতি তিন হাজার টাকার মতো খরচ হয়। ফলন হয় প্রতি বিঘায় তিন থেকে সাড়ে তিন মণ। বর্তমানে এক মণ কালোজিরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯ হাজার টাকায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এসএম গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘জেলায় প্রথম রাণীনগর উপজেলায় কালোজিরার চাষ করা শুরু হয়। এরইমধ্যে কৃষক লিটনকে কালোজিরা চাষে সফল বলা যায়। এই ফসলটি চাষাবাদ করে তিনি রীতিমত এলাকায় হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও উৎসাহে লিটন খন্দকারই প্রথম এলাকায় কালোজিরার চাষ শুরু করেছেন। যদিও এই ফসলটি চরাঞ্চলে বেশি হয়, তবে এই এলাকায়ও কালোজিরা চাষ করা সম্ভব। স্থানীয় কৃষকরা আগামীতে তার দেখাদেখি এই ফসল চাষে আগ্রহী হবেন। সব মিলে ভালো দাম পেলে ধানের মতোই কালোজিরার চাষও কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে মনে করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।