কালবৈশাখী ঝড়ে মনপুরায় ৫ শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত

ঝড়ে উড়ে আসা বসতঘরের চালা (ছবি- প্রতিনিধি)

কালবৈশাখী ঝড়ে ভোলার মনপুরা উপজেলার চার ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরের দিকের ওই ঝড়ে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট  বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকারি-বেসরকারি দফতরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। রবি শস্যেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে বহু গাছপালা। বসতঘর হারিয়ে অনেকে এখন খোলা আকাশের নিচে রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই জানান, ঝড়ে উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের উত্তর সাকুচিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার টিনের চাল উড়ে গেছে। ক্লাশরুম ভেঙে ধুমড়ে-মুচড়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। একই অবস্থা এ ইউনিয়নের আরও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উত্তর সাকুচিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন জয় দাস নামের একজনের টিন দিয়ে তৈরি সেলুনের দোকান ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে যায়। এখন এ দোকান গাছের সঙ্গে ঝুলে রয়েছে। এখন অবস্থা ওই বিদ্যালয়ের পাশের আরও অনেক দোকানের।

উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের রবিউল, মোশারফ সর্দার, এরশাদ জানান, তাদের বসতঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। একই এলাকার সাঈদুর রহমান, মো. জসিম জানান, তাদের ঘরের চালা উড়ে গেছে। দোকানও ধসে গেছে।

বিধ্বস্ত হওয়া বাড়িঘর (ছবি- প্রতিনিধি)

হাজিরহাট ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড দাসের হাট বেড়িপাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রীকৃষ্ণ দাস, সাধন বালা দাস, সাইনুর বেগম ও অলিউল্যার বসতঘরের চাল উড়ে গেছে। ৮নং ওয়ার্ডের মো. আবু মিয়ার বসতঘর ও ৬নং ওয়ার্ডের শ্রীকৃষ্ণ দাসের বসতঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া, উত্তর চর যতিন জামে মসজিদের আংশিক টিনের চাল উড়ে গেছে। এখানকার  বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ পড়ে রয়েছে।

উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল রহিম জানান, ঝড়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল হাসেম সিরাজ কাজী জানান, ঝড়ে মানুষের বসতবাড়ির  ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।

বিধ্বস্ত হওয়া দোকান (ছবি- প্রতিনিধি)

৪নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অলিউল্যাহ কাজল জানান, ঝড়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইউপি সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বলেছি।

হাজির হাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী দ্বিপক জানান, আমার ইউনিয়নে কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমি ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল আজিজ ভূঁঞা বলেন, ‘ঝড়ে উপজেলার পাঁচ শতাশিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করবো।’