ছয় স্কুল ছাত্রীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন ইউএনও

শরীয়তপুর

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ছয় স্কুল ছাত্রীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহম্মেদ। চার দিনের ব্যবধানে ওই ছয় ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন করেছিল পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত হয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেন। ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।  

জানা যায়, ১৯ এপ্রিল শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়নের কিরননগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী শাহানাজ আক্তার (১৩) ও রাজিয়া খাতুন (১৪)-এর বিয়ের আয়োজন করেন পরিবারের সদস্যরা। একইদিনে সখিপুর ইউনিয়নের সখিপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী রোকসানা আক্তারের (১৬) বিয়ের আয়োজন করা হয়। পরেরদিন ২০ এপ্রিল বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল ডিএম খালী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সেলিনা আক্তারের (১৬)। ২২ এপ্রিল বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল চরভয়রা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী শারমীন জাহান ও একই উপজেলার তারাবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মীম আক্তার হাফসার। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহম্মেদ স্কুল ছাত্রীদের বাড়িতে উপস্থিত হন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধি, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সহায়তায় শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বিয়ে বন্ধ করে দেন। ওই স্কুল ছাত্রীদের সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা ইউএনওকে প্রতিশ্রুতি দেন, প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিয়ে দেওয়া হবে না।

এক স্কুল ছাত্রীর মা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, সংসারে অভাব। তাছাড়া সমাজে নিরাপত্তার অভাব। নানা বিষয় চিন্তা করে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেছিলাম। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে আমাদের বুঝিয়েছেন। মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে বিয়ে দেবো এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘স্কুল ছাত্রীদের বিয়ে হচ্ছে এমন খবর পেলেই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে ছাত্রীদের বাড়িতে ছুটে যাই। পরিবারের সদস্যদের বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে অবহিত করি। তখন তারা বিয়ে বন্ধ রাখতে রাজি হয়। চরাঞ্চল হওয়ায় ভেদরগঞ্জ উপজেলায় বাল্যবিয়ের প্রভাব বেশি। আমরা চেষ্টা করছি বাল্যবিয়ে শুন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে।’