বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় তদন্ত কমিটি

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি (ছবি: প্রতিনিধি)দুই সপ্তাহ ধরে আন্দোলনরত দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। শনিবার (২৬ মে) দুপুরে খনি এলাকাতেই এই বৈঠক শুরু হয়।

আউট সোসিং শ্রমিকদের স্থায়ী নিয়োগ প্রদান, বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান, প্রফিট বোনাসসহ ১৩ দফা দাবিতে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি’র শ্রমিক-কর্মচারীরা কর্মবিরতির পাশাপাশি অবরোধ কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছেন। খনি গেটের সামনে বসে অবরোধ কর্মসূচি থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত খনি থেকে কাউকে বের হতে কিংবা কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

কর্মসূচি চলার ১৪তম দিনে আজ শনিবার বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে আসেন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আন্দোলনরত শ্রমিক নেতা রবিউল ইসলাম ও ওয়াজেদ আলীর নেতৃত্বে ও ক্ষতিগ্রস্থ ২০ গ্রামবাসীদের সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক মশিউর রহমান বুলবুলের নেতৃত্বে ৪০ সদস্য বিশিষ্ট একটি দল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খনিতে প্রবেশ করেন। এই আলোচনায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কর্মকর্তারাও অংশ নিচ্ছেন।

জ্বালানি মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (প্রশাসন) মোস্তফা কামাল, সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন জ্বালানি বিভাগের উপসচিব মুহা. মনিরুজ্জামান ও সদস্য হিসেবে রয়েছেন হাইড্রোকার্বন ইউনিটের পরিচালক এএসএম মঞ্জুরুল কাদের। আলোচনার জন্য খনিতে প্রবেশের আগে সকালে খনি গেটে আন্দোলরতদের এক বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে আন্দোলনরত শ্রমিকরা

গত ১৩ মে রবিবার থেকে খনির এক হাজার ৪১ জন বাংলাদেশি শ্রমিক এই কর্মবিরতি শুরু করেন। কিন্তু দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবং সরকারের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত বুধবার থেকে তারা অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন। এতে করে খনির ভেতরে কর্মকর্তাদের যাওয়া-আসা বন্ধ হয়ে গেছে।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাদের অভিযোগ, গত ২৬ এপ্রিল খনি কর্তৃপক্ষকে তাদের দাবি ও কর্মবিরতির বিষয়ে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ তাদের দাবির বিষয়ে কোনও কর্ণপাত না করায় তারা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেন। শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে নিজেদের ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ২০ গ্রামের মানুষ।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম জানান, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির সঙ্গে আলোচনা করতে খনিতে প্রবেশ করেছেন তারা। আলোচনায় দাবি-দাওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা ও বাস্তবায়ন করা হলে আন্দোলন কর্মসূচির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দীন আহাম্মদ জানান, ‘শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে আলোচনার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পরে বিষয়টি জানানো হবে।’

আরও পড়ুন- বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কর্মবিরতির সঙ্গে শুরু হচ্ছে অবরোধ