নরসিংদীতে দেশীয় পদ্ধতিতে কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা

নরসিংদীতে দেশীয় পদ্ধতিতে কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরাকোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন নরসিংদী জেলার খামারিরা। তারা জানাচ্ছেন, কোনও প্রকার ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার ছাড়াই দেশীয় খাবার খাইয়ে লালনপালন করা হচ্ছে এসব গরু। এ বছর পশু খাদ্যের দাম বাড়তি হওয়ায় গরু লালন পালনে খরচ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন খামামিরা। দেশের বাইরে থেকে অবৈধপথে অবাধে গরু না আসলে ঈদের হাটে এসব গরু বিক্রি করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোরবানির ঈদকে ঘিরে প্রতি বছরের মতো এবারও গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন নরসিংদী জেলার খামারিরা। ৬ মাস থেকে ১ বছর আগে দেশের বিভিন্ন হাট থেকে ছোট গরু কিনে লালনপালন শুরু করেন তারা। খামারের পাশাপাশি লাভের আশায় অনেক কৃষক পারিবারিকভাবেও গরু মোটাতাজা করছেন। এসব গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে ঘাস, খড়, ভুষি, সয়াবিনসহ দেশীয় সব খাবার খাইয়ে। তবে এ বছর পশু খাদ্যের দাম বাড়তি হওয়ায় গরু লালন পালনে খরচ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন খামারিরা।নরসিংদীতে দেশীয় পদ্ধতিতে কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা

ব্যবসায়ীরা জানান, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করা এসব গরু। দেশীয় খাবার খাওয়ানো ও ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগ না করায় বাজারে এসব গরুর চাহিদা থাকে বেশি। ফলে লাভের আশা করছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। তবে ভারত ও মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে গরু আসলে লোকসানের আশঙ্কাও রয়েছে তাদের। নরসিংদীতে দেশীয় পদ্ধতিতে কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা 

শিবপুর উপজেলার মুন্সেফের চর গ্রামের খামারি কিবরিয়া গাজী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার খামারে এ বছর ১০০টি গরু লালনপালন করা হচ্ছে। এগুলোকে শুধুই দেশীয় খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে ৬ মাস আগে থেকে ১ বছর আগে এসব গরু সংগ্রহ করেছিলাম। দিনদিন পশু খাদ্যেও দাম বাড়ছে, এ কারণে গরু পালনের খরচ বেড়েছে। কিন্তু গরুর দাম তুলনামূলক সেরকম বাড়ে না। এরপরও অবৈধ পথে গরু আমদানি না হলে লাভবান হওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’

শহরের কাউরিয়া পাড়ার খামারি মোশারফ হোসেন বলেন, ‘প্রতি বছর অবৈধপথে আসা ও আমদানি করা গরুর কারণে দেশীয় খামারিদের লোকসান গুনতে হয়। এতে করে খামারিরা নিরুৎসাহিত হয়। খামার বন্ধ হয়ে গেলে বেকারত্বের চাপও বাড়বে। অবাধে যাতে গরু আমদানি না হয় সেদিকে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।’নরসিংদীতে দেশীয় পদ্ধতিতে কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নরসিংদীতে পশু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা নেই বললেই চলে। পশুর মৃত্যুঝুঁকির কারণে খামারিরা এ ব্যাপারে সচেতন। এরপরও পশু মোটাতাজাকরণে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার বন্ধে মাঠ পর্যায়ে তদারকি করা হচ্ছে।’

ঈদকে সামনে রেখে এ বছর নরসিংদী জেলায় ২৬ হাজার ৩৫৩টি গবাদি পশু মোটাতাজা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন- 

কোরবানির জন্য গরু প্রস্তুতে ব্যস্ত যশোরের খামারিরা

২ হাজার ৯৪ কেজি ওজনের ‘রাজা বাবু’র দাম ২২ লাখ টাকা!