বাল্যবিয়ে ও মাদকের খবর দিলেই ৫০ টাকার ফ্লেক্সিলোড!

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী (সামনে এক হাত দিয়ে অন্য হাতে বেঁধে রেখেছেন, এক হাতের মুঠোয় কালো মোবাইল ফোন)বাল্যবিয়ে ও মাদক ব্যবসা প্রতিরোধে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়েছে যশোরের মণিরামপুর উপজেলা প্রশাসন। এ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আহসান উল্লাহ শরিফী ঘোষণা দিয়েছেন, বাল্যবিয়ে ও মাদক সেবন বা মাদক ব্যবসার খবর দিলে সংবাদদাতার মোবাইল ফোনে ৫০ টাকা পাঠানো হবে। একইসঙ্গে ভিক্ষারত অবস্থায় কেউ ভিক্ষুক ধরে দিলে তাকেও ৫০ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।

গত ১২ আগস্ট উপজেলার মশ্মিমনগর ইউনিয়ন পরিষদে আনসার-ভিডিপির এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী। ওই সময় তিনি বলেন, ‘মণিরামপুরে বাল্যবিয়ের হার অনেক বেশি। এ উপজেলায় মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও অনেক। বাল্যবিয়ে ও মাদক ব্যবসা রোধে আমাদের তৎপর হতে হবে। এক্ষেত্রে কেউ যদি বাল্যবিয়ে ও মাদক সেবন বা মাদক ব্যবসার খবর দেন, তবে তার মোবাইল ফোনে ৫০ টাকা পাঠানো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভিক্ষারত অবস্থায় কেউ ভিক্ষুক ধরে দিলে তাকেও ৫০ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী বুধবার (১৫ আগস্ট) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রশাসন চাইলে বাল্যবিয়ে ও মাদক নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। আমি এই ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর। বাল্যবিয়ে ও মাদকের সংবাদদাতাকে উৎসাহিত করতে আমার পক্ষ থেকে ৫০ টাকা মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছি। খবরের সত্যতা পাওয়ামাত্রই সংবাদদাতার নম্বরে নির্ধারিত অ্যামাউন্ট ঢুকে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মণিরামপুরে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরপরও অনেকে ভিক্ষা করছে। এসব ভিক্ষুককে ধরে জেলে দেওয়া হবে। কেউ ভিক্ষুক ধরে দিতে পারলে তাকে ৫০ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।’ এসব ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার জন্য তার মোবাইল ফোন নম্বর ০১৭৩৩-০৭৪০৩৯ –তে কল করার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) মণিরামপুরে ইউএনও হিসেবে যোগ দেন আহসান উল্লাহ শরিফী। এর আগে তিনি মাগুরা জেলার শ্রীপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ইউএনও হিসেবে মণিরামপুর তার দ্বিতীয় কর্মস্থল। নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর তিনি বাল্যবিয়ে ও মাদক ব্যবসা প্রতিরোধে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এর অংশ হিসেবে ওই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।