স্থানীয়রা জানান, ১৪৪ ধারা জারির কারণে দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত না হতে পারলেও সাবেক মন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের সামনে পথসভা করেন। অপরদিকে, বর্তমান এমপি মজিদ মণ্ডল সমর্থিত উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার নেতৃত্বে অপরপক্ষের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে সভা-সমাবেশ করতে না পেরে এর আশপাশে লাঠিসোঠা নিয়ে অবস্থান নেন। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.কে.এম ইউসুফজী খান বলেন, ‘নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক চা-চক্রের আমন্ত্রণে সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের বৃহস্পতিবার বিকালে দলীয় কার্যালয়ে আসার কথা ছিল। কয়েক দিন আগে থেকেই এ কর্মসূচি নির্ধারণ করা ছিল। এমপি মজিদ মণ্ডল সমর্থিত উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা এ কর্মসূচির কথা শুনে তার দলবল বুধবার বিকালে দলীয় কার্যালয়ে আসেন। তারা পিয়নকে ভয় দেখিয়ে দলীয় কার্যালয়ের চাবি ছিনিয়ে নেন। বৃহস্পতিবার বিকালে বেলকুচি থানা পুলিশ এসে পাটি কার্যালয় খুলে দিলেও রেজা ও তার দলবল লাঠিসোঠা নিয়ে আশেপাশে অবস্থান নেন। এ ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসন থেকে দলীয় কার্যালয় ও আশেপাশে ১৪৪ ধারা করে। পরে লতিফ বিশ্বাস সাহেব হাসপাতালের সামনে পথসভা করেন।’
বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ওলিউজ্জামান বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিভক্ত হয়ে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে সভা-সমাবেশ করার কথা ছিল। এক পক্ষ আগেই লাঠিসোঠা নিয়ে পৌর এলাকায় অবস্থান নেয়। আরেক পক্ষ মুখোমুখি হবার উপক্রম হয়। এমন খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে। এছাড়া, সহিংস ঘটনা এড়াতে পুলিশ পৌর এলাকায় অবস্থান নিয়েছে।’
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের চাবি কেউ কেড়ে নেয়নি। এমনকি, আমরাও কাউকে ঢুকতে দিইনি বা চাবি দিয়ে খুলতে সহযোগিতাও করিনি। প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। অপ্রীতিকর ও সহিংস ঘটনা এড়াতে পুলিশ মাঠে রয়েছে।’
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল হক রেজার মুঠোফোনে বৃহস্পতিবার বিকালে বার বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস ও তার স্ত্রী বেলকুচির পৌর মেয়র আশানুর বিশ্বাসের সঙ্গে যুবলীগ নেতা সাজ্জাদুল হক রেজার বহুবিধ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও প্রতিহিংসা রয়েছে। সম্প্রতি, চাঁদাবাজির ঘটনায় বেলকুচি পৌরসভা কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় যুবলীগ নেতা রেজা ও ফারুকসহ বেশ কয়েক জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন মেয়র আশানুর বিশ্বাস। এর পর থেকে পূর্বের দ্বন্দ্ব ও প্রতিহিংসা প্রকাশ্যে সহিংস ঘটনায় রূপ নেয়। রেজা বর্তমানে এমপি মজিদ মণ্ডলের সমর্থক।