কিশোরগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহেরের মৃত্যু, সুরতহাল প্রতিবেদনে আঘাতের চিহ্ন

সিনিয়র নির্বাহী মেজ্রিস্ট্রেট আবু তাহের মোহাম্মদ সাঈদের (৫৮)

সদ্য প্রয়াত কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মোহাম্মদ সাঈদের (৫৮) সুরতহাল প্রতিবেদনে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। শনিবার (১০ নভেম্বর) কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, শুক্রবার (৯ নভেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে অফিসার্স ডরমেটরি থেকে আবু তাহের সাঈদকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের পর হাসপাতালের নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শনিবার সকালে মরদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়। তার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে লাশের কপাল, নাক ও মাথার ডান পাশে চারটি ছোট আঘাতের চিহ্নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই কর্মকর্তা ডায়রিয়ায় অসুস্থ ছিলেন। আমরা ধারণা করছি, সম্ভবত টয়লেটে পড়ে গিয়ে তিনি আহত হয়েছিলেন।

এদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে খাদ্যে বিষক্রিয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রমজান মাহমুদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। এসময় কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান সেখানে পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য ঢাকার মহাখালীতে নমুনা পাঠানো হবে।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামিল জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে অফিসার্স ডরমেটরিতে আবু তাহের সাঈদকে (৫৮) অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে দ্রুত তাকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরে রাত ১০টায় শহরের পাগলা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রয়াতের নামজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ শহরের সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের পর দুপুরে দাফনের জন্য নরসিংদীর পলাশ উপজেলার মাঝেরচর গ্রামের বাড়িতে তার নিয়ে যাওয়া হয়।

ময়নাতদন্ত বিষয়ে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ মৃত্যু নিয়ে যেন কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে সেজন্য ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়। তাছাড়া কয়েকটা ছোটখাট আঘাতের চিহ্নও ছিল, এ কারণে পরে কেউ যেন বলতে না পারে যে- আঘাতের চিহ্ন থাকার পরও কেন ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন করা হলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময় উনার সঙ্গে কেউ ছিল না, তাই ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণও বলা সম্ভব নয়।’

প্রসঙ্গত, আবু তাহের মোহাম্মদ সাঈদ প্রশাসন ক্যাডারের ৮৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি চিরকুমার ছিলেন।