সিডরের পর দশক পার হয়ে গেলেও নির্মিত হয়নি পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র

আজ ১৫ নভেম্বর। ২০০৭ সালের এই দিনে বাগেরহাটসহ উপকূলীয় জনপদ লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় সিডর। এক দশক পেরিয়ে গেছে। তারপরও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে বাগেরহাটসহ উপকূলের মানুষকে আতঙ্কে থাকতে হয়। কারণ এখনও নির্মিত হয়নি পর্যাপ্ত সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র। প্রতিবছর এই দিবসটি এলেই সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকার মানুষ দাবি তোলেন পর্যাপ্ত সংখ্যক ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের।ঘূর্ণিঝড়

প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরের কথা মনে পড়লে এখনও শিউরে ওঠেন উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে মানুষ। ঘূর্ণিঝড় সিডরে বাগেরহাট জেলাতেই শিশু ও মহিলাসহ মারা যান প্রায় ২ হাজার মানুষ। ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় জনপদের হাজার হাজার ঘর-বাড়ি। বাগেরহাটের শরণখোলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় নানান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে স্বজনহারা পরিবার ও সংগঠনগুলো দিবসটি পালন করে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলায় বসবাসরত প্রায় ১৫ লাখ মানুষের আশ্রয়ের জন্য সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মাত্র ২৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরে নতুন করে আরও ১৯টি নির্মাণ করা হচ্ছে, যা চাহিদার তুলনায় খুবই নগণ্য। ইতোমধ্যে যেসব ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলোতেও নেই পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা।

ঘূর্ণিঝড় সিডরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালি এলাকা। সেখানে প্রায় এক হাজার ৭০০ মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এলাকাটিতে এখনও পর্যাপ্ত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে না ওঠায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজ্জাম্মেল হোসেন ক্ষোভের সাথে বলেছেন, সেদিন সিডর কবলিত এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের অভাবেই অনেক বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, জেলায় নতুন করে আরও ১৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। পুরাতন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র সংস্কা এবং পানি ও স্যানিটেশনের সুব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।