স্থানীয়দের অভিযোগ, ইটভাটা মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকাবাসীদের কেউ মুখ খোলার সাহস করেন না। ভাটার মালিকরা দরিদ্র কৃষকদের এককালীন কিছু টাকা দিয়ে চাষাবাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জমির উপরি অংশের উর্বর মাটি কেটে নিচ্ছে। এছাড়াও ভাটাগুলোতে কয়লার পাশাপাশি জ্বালানি হিসেবে গাছপালা কেটে কাঠ ব্যবহার হচ্ছে। প্রভাবশালী ভাটা মালিকরা আর্থিকভাবে লাভবান হলেও এতে কৃষি জমিগুলো উর্বরতা হারাচ্ছে এবং ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় মানুষের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া, মাদলা ও আড়িয়া ইউনিয়নে এবং শাজাহানপুর উপজেলাধীন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুজাবাদ এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও জনবসতিপূর্ণ এলাকায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠেছে শতাধিক ইটভাটা। অধিকাংশ ভাটায় ধোঁয়া বের হওয়ার জন্য কম উচ্চতার চিমনি ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক ভাটাগুলোতে ড্রামের চিমনিও বসানো নেই। এসব ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশসহ এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হচ্ছে। ভাটায় ইট তৈরির জন্য উপজেলার কামারপাড়া, বারআঞ্জুল, চকজোড়া, খরনা ধাওয়াপাড়া, দাড়িগাছা পলিপাড়া গ্রাম, নিশ্চিন্তপুরের নন্দগ্রামে অ্যাসকেভেটর মেশিন দিয়ে উর্বরজমি থেকে মাটি তোলা হচ্ছে। এছাড়াও উপজেলার সাজাপুরের পদ্মপুকুরে সড়কের পাশ থেকে গভীর গর্ত করে ইটভাটার জন্য মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এ মাটি আনা নেওয়ার জন্য ট্রাকগুলো ব্যবহারের ফলে গ্রামীণ রাস্তাগুলো ভেঙে যাচ্ছে এবং খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে।
ইটভাটা মালিক সমিতির সেক্রেটারি হাজি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন ম্যানেজ করেই ব্যবসা করছি। এখন সাংবাদিকরা ম্যানেজ হলেই রমরমা ব্যবসা করা যাবে।’
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, ‘প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কৃষি জমির মাটি কাটা হচ্ছে ইটভাটার মালিকদের এমন দাবি মিথ্যা। এই ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ফুয়ারা খাতুন বলেন, ‘এখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত আছি। এ ব্যাপারে জমি থেকে মাটি উত্তোলনের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’