অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে রয়েল মিডিয়া কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি

অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে রয়েল মিডিয়া কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতিময়মনসিংহ রয়েল মিডিয়া কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্নেহাশীষ চন্দ্র দে’র আপসারণসহ ৮ দফা দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। সোমবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে এই কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।

আন্দোলনকারী শিক্ষক ও কর্মচারীদের দাবিগুলো হচ্ছে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্নেহাশীষ চন্দ্র দে'র অপসারণ ও নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ, কলেজের পাঠদানের অনুমতি ও স্বীকৃতি নবায়ন করা, প্রতিষ্ঠানের নামে নিজস্ব জমি কেনা, শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি বিধি মোতাবেক বেতন-ভাতাদি প্রদান করা, কলেজের পরিচালনা কমিটি গঠন করা, প্রতারণা না করে বিধি মোতাবেক কলেজ পরিচালনা করা, কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষক মন্ডলীর মতামত উপেক্ষা না করা ও  কলেজ পরিচালনায় পক্ষপাতমূলক আচরণ না করা।

আন্দোলনকারী শিক্ষক কর্মচারীরা জানান, সার্টিফিকেট জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গত এক বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্নেহাশীষ চন্দ্র দে’র পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক- কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকসহ বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করেও কোনও কাজ না হওয়ায় আজ সোমবার নতুন করে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন শিক্ষক কর্মচারীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষক বাংলা বিভাগের প্রভাষক ইমরুল হাসান সিদ্দিকী জানান, ‘৮ দফা দাবিতে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষক কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে যান। পরে অতিরিক্ত  জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের মৌখিক আশ্বাসে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে অধ্যক্ষ স্নেহাশীষের হুমকি ও অপতৎপরতার প্রেক্ষিতে ২৯ নভেম্বর শিক্ষক-কর্মচারীরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনে নামেন। এরপরও দাবি পূরণ না হওয়ায় আন্দোলন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছেন  শিক্ষক-কর্মচারীরা।’ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলেও জানান তিনি।

একই কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক শফিকুল ইসলাম জানান, ‘২০০৬ সালে কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় স্নেহাশীষ চন্দ্র দে’কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মাস্টার্স পাস না করেও কিছু দিন পর তিনি নিজে নিজেই অধ্যক্ষ বনে যান।’

তিনি আরও জানান, ‘কলেজের আয়-ব্যয়ের কোনও অডিট কার্যক্রম না করেই নিজের ইচ্ছেমতো অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি। অকারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে তিনি খারাপ ব্যবহার করে থাকেন। নানা অনিয়মের কারণেই শিক্ষক কর্মচারীরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।’

অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্নেহাশীষ চন্দ্র দে বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘শিক্ষক- কর্মচারীদের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও অযৌক্তিক। কলেজ ও তার ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার জন্য একটি চক্র শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনে।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ‘আন্দোলনকারীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে অনিয়ম তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’