জামালপুরে সরিষার বাম্পার ফলন

121

এবার রবি মৌসুমে জামালপুর জেলায় ব্যাপক পরিমাণ সরিষার আবাদ হয়েছে। সরিষা চাষ প্রচুর লাভজনক হওয়ায় এই ফসল চাষে এবার অনেক কৃষক নতুন করে যোগ দিয়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভাল ফলন পাওয়ার আশা করছেন তারা।

জেলার কৃষি সস্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আমিনুল ইসলাম জানান, এবার ২১ হাজার ৩শ ৫৮ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ২শ ৯০ হেক্টর জমিতে। কম খরচে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা এবার বোরো ধানের জমিতে আগাম জাতের ও অধিক ফলনশীল সরিষার চাষ করেছেন।

সদর উপজেলার পলাশতলা গ্রামের সুলতান মিয়া, আব্দুল বারেক, জামাল মিয়া, গিয়াস উদ্দিন ও মিজানুর রহমান জানান, তার জমিতে আগাম জাতের সরিষার আবাদ করেছেন। ধানের দাম না থাকায় ধান আবাদে প্রতি বছরই লোকসান হচ্ছে। তাই বিকল্প ফসল হিসাবে এবার তারা সরিষা চাষে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।

শ্রীপুর গ্রামের সরিষা চাষি আকছেদ আলী, জব্বার মিয়া ও কামাল উদ্দিন বলেন, সরিষা চাষে সার এবং কীটনাশক কম লাগে। পানি সেচ ও নিরানি লাগে না বললেই চলে। খরচ খুব কম লাগে ও কম সময়ে সরিষা ঘরে ওঠানো যায়। বর্তমানে বাজারে সরিষার দামও বেশ ভাল।

জামালপুর জেলার কৃষি সস্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি টাকা লাভ করতে পারবেন। চলতি বছর হেক্টর প্রতি সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১.২৯ মেট্রিক টন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরিষার চাষে অতিরিক্ত আয় হিসাবে মৌমাছির বাক্স স্থাপনের মাধ্যমে মধু আহরণ করা হয়। এতে কৃষকেরা অধিক লাভসহ সরিষার ফলনও বেশি পাচ্ছেন। কারণ সরিষার ক্ষেতে মৌমাছির বাক্স স্থাপনের ফলে মৌমাছির শরীর দ্বারা পুরুষ এবং স্ত্রী সরিষার পরাগায়নের ফলে সরিষার উৎপাদন বেড়ে যায়।’

সরিষার আবাদ লক্ষ্যমাত্রার জমির তুলনায় কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিগত বছরে বন্যার প্রকোপ কম হওয়ায় রোপা আমন ধান আবাদ এবার ৭ হাজার হেক্টর বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও গত বছরের তুলনায় ভূট্টা আবাদ এবার ১ হাজার হেক্টর বৃদ্ধি পেয়েছে।’ এদিকে সরিষার রোগ বালাই দমনে মাঠে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।