অসহায় ২ রোগীকে যমুনার পাড়ে ফেলে দেওয়ার রহস্য এখনও উদ্ঘাটিত হয়নি

অজ্ঞাত দুই রোগী। বাঁ পাশের জন ইতোমধ্যে মারা গেছেনসরকারি হাসপাতালের বিছানা ও চাদরসহ সিরাজগঞ্জে যমুনার পাড়ে পাউবোর বাঁধে মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত পরিচয়ের অসহায় সেই দুই নারী রোগীকে ফেলা দেওয়ার রহস্য এখনও উদ্ঘাটিত হয়নি। ঘটনার নেপথ্যে যারা দায়ী তাদের শাস্তি তো দূরের কথা, গত আড়াই মাসেরও বেশি সময়ে চিহ্নিত করা হয়নি অপরাধীদের।

এ ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালকের নির্দেশে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য বিভাগের দুটি পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন গত এক মাস আগে স্বাস্থ্য অধিদফতরে জমা পড়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস হয়ে রাজশাহীর পরিচালকের দফতর থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরে জমা হলেও রহস্যজনক কারণে তা আলোর মুখ দেখছে না। স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের দফতর থেকে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ এখনও নেওয়া হয়নি। ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টা শুরু থেকেই রয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন স্বাস্থ্য অধিদফতরে ফের চাপা পড়েছে। কোনওভাবেই ঘটনাটির রহস্য উন্মোচন হচ্ছে না।

সিরাজগঞ্জ আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তদন্ত কমিটির প্রধান সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আবু রায়হান ভূঁইয়া, তত্ত্বাবধায়ক ডা. রমেশ চন্দ্র সাহা ও স্বাস্থ্য বিভাগের তদন্ত কমিটির প্রধান ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম বুধবার (১৬ জানুয়ারি) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন গত এক মাস আগে রাজশাহীর পরিচালকের দফতরের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। এর বেশি কিছু জানি না।’

এ বিষয়ে কথা বলতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে গত তিন দিনে অনেকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ‘মিটিংয়ে ব্যস্ত আছি’ লিখে ছয়বার মেসেজ পাঠিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জ আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তিকৃত অসহায় অজ্ঞাত ওই দুই রোগীকে গত ২৫ অক্টোবর পাউবোর বাঁধে ফেলে রাখা হয়। হাসপাতালের সিলযুক্ত ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত বিছানা ও চাদর দেখে তাদের শনাক্ত করেন গণমাধ্যমকর্মীরা ও পুলিশ। সরকারি হাসপাতালে ফের তাদের ভর্তি করা হয়। এরই মধ্যে গ্যাংরিন রোগে শরীরে পচন নিয়েই বয়স্কজন হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডের মেঝেতে অযত্নে মারা যান। অপর মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তাদের দুজনের কারও পরিচয় এখনও জানা যায়নি।