‘রেলের হারানো যৌবন পুনরুদ্ধারের কাজে আমরা হাত দিয়েছি’

কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন পরিদর্শনে নূরুল ইসলাম সুজন (ছবি– প্রতিনিধি)

কুড়িগ্রামসহ দেশে একসময় রেলের বিরাট যৌবন ছিল মন্তব্য করে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘রেলের সেই হারানো যৌবন পুনরুদ্ধারের কাজে আমরা হাত দিয়েছি।’

শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকালে কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।

রেলকে অবজ্ঞা করে একটা দুস্থ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের চলাচল ও মালামাল পরিবহনের কাজে প্রায় আশিভাগ সড়কের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি উন্নত দেশের স্বপ্ন নিয়ে দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আজ তিনি উপলুব্ধি করছেন, একটি সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থা যদি আমরা তৈরি করতে না পারি, তাহলে আমাদের পরিবহন খাতে সমস্যা থেকে যাবে। এজন্য আমরা আলাদা রেল মন্ত্রণালয় তৈরি করেছি।’

রেলমন্ত্রী বলেন, ‘যেসব জেলায় রেললাইন নেই, সে সব জেলায় আমরা রেললাইন সম্প্রসারণ করবো।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কুড়িগ্রামে একসময় রেল যোগাযোগ ছিল এবং তার বিরাট যৌবন ছিল। সেটা পুনরুদ্ধারে আমরা কাজ শুরু করেছি। আপনারা এখানকার যে সমস্যাগুলোর কথা বলছেন, সে সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই। আমি সেগুলো বাস্তবে পরিদর্শন করার জন্য এখানে এসেছি। রমনা (চিলমারী) পর্যন্ত যে রেললাইন তার সমস্যা সমাধানে আমরা প্রকল্প গ্রহণ করে সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন করবো।’

ভারসাম্যহীন রেলের অবস্থাকে সংস্কার করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সাড়ে ৫শ’ যাত্রীবাহী কোচ এবং একশ’ রেল ইঞ্জিন নিয়ে আসবো। আমরা অনতিবিলম্বে কুড়িগ্রামের মানুষের রেলের ব্যাপারে যে দাবিগুলো আছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করবো।’

চিলমারী-সুন্দরগঞ্জ সেতুতে রেললাইন সংযোগের ব্যাপারে কুড়িগ্রামের স্থানীয় জনতা ও রেল যোগাযোগ উন্নয়ন নিয়ে আন্দোলন করা ‘রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণ-কমিটি’র দাবির ব্যাপারে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘ওই সেতু নিয়ে আমার কোনও ধারণা নেই। সেটা কী ধরনের হচ্ছে, সেটার সঙ্গে রেল সংযোগ যাবে কি যাবে না আমি জানি না। সেহেতু আমি সেটা নিয়ে কথা বলতে পারছি না।’

চিলমারী-কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেখা যাক, কতদূর কী হয়।’

তবে চিলমারী-কুড়িগ্রাম-ঢাকা সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্পষ্ট কোনও কথা দেননি রেলমন্ত্রী। পরে মন্ত্রী সড়ক পথে চিলমারী উপজেলার রমনা রেলস্টেশন পরিদর্শনে যান।

রেলমন্ত্রীর কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন– কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাফর আলী, জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন, পুলিশ সুপার মো. মেহেদুল করিম, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুসহ লালমনিরহাট রেল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।