লাঙ্গলবন্দে চলছে মহাষ্টমীর স্নানোৎসব

স্নানোৎসবে অংশ নেওয়া লোকজননারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকাল থেকে দুই দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী স্নানোৎসব শুরু হয়েছে।  শেষ হবে শনিবার সকাল ৮টা ৫৮ মিনিটে। ১৮টি স্নান ঘাটের মাধ্যমে এ উৎসব অংশ নিচ্ছেন পূণ্যার্থীরা ।  স্নানোৎসব উপলক্ষে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন পক্ষ থেকে  কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। 

হিন্দু সম্প্রদায়ের মতে পশুরাম মনি তার মাকে কুঠার দিয়ে আঘাত করায় কুঠার তার হাতের মধ্যে লেগে যায়। পরে সে এই কুঠার হাত থেকে সরানোর জন্য অনেক পূণ্যের কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে কুঠার দিয়ে মাঠি খনন করতে করতে লাঙ্গলবন্দ এলাকায় ব্রক্ষপুত্র নদে এসে কুঠার থেকে পরিত্রাণ পান। এই থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এই লাঙ্গলবন্দের ব্রক্ষপুত্র নদে স্নান করে পাপ মোচনের জন্য। এবার স্নাৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১৫-২০ লাখ পুণ্যার্থীরা অংশ নেবে বলে আশা করছেন নাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব কমিটির নেতারা।  

কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে আসা শংকর সাহা ও তার স্ত্রী রানী সাহা । তারা বলেন, প্রতিবছর পূণ স্নানে অংশ নিতে আসেন। তবে এই বছর রাস্তা ঘাট প্রশস্ত করায় এবং ঘাটে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকায় সাচ্ছন্দ্যে পূণ্য স্নান করতে পেরেছেন।

চট্টগ্রামের রমেন বিশ্বাস স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে এসেছেন স্নান করতে।  তিনি বলেন, এবার গত বছরের তুলনায় পূণ্য স্নানে অংশ গ্রহণকারী মানুষে ভিড় কিছুটা কম। কারণ দু’দিন পর পহেলা বৈশাখ। আবহাওয়া পরিস্থিতি খারাপ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক পূণ্যার্থী আসেননি। রওনকা দেবী বলেন, পশু রাম মনি এই স্থানে গোসল করে পূণ্য লাভ করেছিল। তার কারণ পূণ্য লাভের আশায়  প্রতি বছর এই দিন পাপমোচন ও পূণ্যের আশায় তারা ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে আসি। 

বন্দর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা পিন্টু বেপারী বলেন,  প্রতিটি স্নান ঘাটে পুলিশের পাশপাশি নিরাপত্তার জন্য  ২০ জন করে নারী আনসার মোতায়ন করা হয়েছে। যাতে কোন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে এজন্য  ৯ জন নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেটের  সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করছে।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ জানান,  লাঙ্গলবন্দে স্নান উৎসব সফলভাবে সম্পন্ন করতে পোশাকে সাদা পোশাকে ১৬০০ পুলিশ সদস্য মোয়াতায়ন করা হবে। এছাড়া র‌্যাব, আনসার ও জেলা প্রশাসনের মাজিস্ট্রেট কাজ করছে।

তিনি বলেন,তিন কিলোমিটার এলাকায় আটটি ওয়াচ টাওয়ার ও ৩৭টি সিসি টিভি ক্যামেরা মাধ্যমে ঘাট ও রাস্তা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।  একটি টিম সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো মনিটরিং করছে। যাতে করে কেউ কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।