আবার সচল খুলনা শিল্পাঞ্চল

পাটকলটানা ৯৬ ঘণ্টা ধর্মঘট পালন শুরুর ২৪ ঘণ্টা পরই মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। ফলে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে খুলনার শিল্পাঞ্চলে। খুলনা ও যশোরের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ পাটকলের শ্রমিকরা যার যার পাট কলে কাজে যোগ দিয়েছেন। বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের পর তারা উৎপাদন শুরু করলেন।

পাটকল শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় সহকারী সম্পাদক মো. মুরাদ হোসেন জানান, ‘শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের আশ্বাসে আমরা কর্মবিরতিসহ সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। শ্রমিকরা সবাই যার যার কাজে ফেরত গেছে।’ 

পাটকল সিবিএ নন সিবিএ ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, ‘বকেয়া মজুরি পাওনার দাবিতে গত ১৩ মার্চ থেকে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম, দৌলতপুর, খালিশপুর ও যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেন। যা ধাপে ধাপে গতিশীল হয়। ২, ৩ ও ৪ এপ্রিল ধর্মঘট ও অবরোধ কর্মসূচির পর ১৫ এপ্রিল থেকে আবার ৯৬ ঘন্টার অবরোধ ও ৪ ঘন্টার অবরোধ শুরু হয়েছিল। তবে গতকাল মধ্যরাতে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৫ এপ্রিল ১০ সপ্তাহ’র মজুরি প্রদান এবং আগামী ১৮ মে’র মধ্যে মজুরি কমিশন শ্রমিকদের হাজিরা খাতায় লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এর ফলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাকি সাতটি দাবির বিষয় নিয়ে আগামী ৮ মে মন্ত্রণালয়ে আবার বৈঠক হবে এবং সেখান থেকে অবশিষ্ট দাবিগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।’

বিজেএমসি খুলনা জোনের লিয়াজো কর্মকর্তা শঙ্কর ভুইয়া বলেন, 'ভোর ৬টা থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও উপস্থিতি কম ছিল। ফলে প্রথম দিন পুরোমাত্রায় উৎপাদন হয়নি। তবে বুধবার থেকে উৎপাদনে গতি বাড়বে আশা করছি।'

উল্লেখ্য, জাতীয় মজুরি কমিশন-২০১৫ এর রোয়েদাদ, পাটক্রয়ের অর্থবরাদ্ধ, বদলী শ্রমিক স্থায়ীকরণ, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের সব বকেয়া পরিশোধ, শ্রমিকদের প্রতি সপ্তাহে মজুরি পরিশোধসহ বকেয়া মজুরি প্রদান, খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিলের শ্রমিকদের বিজেএমসির অন্যান্য মিলের মতো সব সুযোগ-সুবিধা প্রদানসহ ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে রপাটকল শ্রমিকরা। সর্বশেষ চলতি মাসের ২, ৩ ও ৪ এপ্রিল দেশের সব পাটকলে এক যোগে ৭২ ঘন্টা ধর্মঘট ও ৪ ঘণ্টা করে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন তারা। শ্রমিকদের ধর্মঘট ও অবরোধের কারণে মিলসহ শিল্পাঞ্চল খুলনা প্রায় অচল হয়ে পড়ে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাসের ভিত্তিতে তারা আন্দোলন থেকে পিছু হটলেন।