বগুড়ায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সন্ত্রাসী স্বর্গ নিহত

রাফিদ আনাম স্বর্গবগুড়ায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে  শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী রাফিদ আনাম স্বর্গ (২৫) নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের ধরমপুর এলাকায় ধুন্দল সেতুর দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে সুবিল খালের পাড়ে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গুলিবিনিময়ের সময় তিনি নিহত হন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে এক রাউন্ড গুলিভর্তি বিদেশি ৭.৬২ ক্যালিবারের একটি পিস্তল ও একটি বার্মিজ চাকু পাওয়া গেছে। সদর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে বগুড়া শহরের ধরমপুর ধুন্দল সেতুর দক্ষিণ পশ্চিম পাশে সুবিল খাল পড়ে সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি বিনিময় চলছিল। শব্দ পেয়ে পুলিশের টহল দল সেখানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুস্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায়। সেখানে গুরুতর অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাশেই এক রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশি ৭.৬২ ক্যালিবারের পিস্তল ও একটি বার্মিজ চাকু পড়েছিল। তিনি (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) ও সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান তাকে উদ্ধার করে দ্রুত বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, হাসপাতালে উপস্থিত জনগণ তাকে খান্দারের ‘স্বর্গ’ হিসেবে শানাক্ত করেন। সে বগুড়া শহরের খান্দার আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন এলাকার মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে রাফিদ আনাম স্বর্গ (২৫)। তার বিরুদ্ধে বগুড়া সদর ও শাজাহানপুর থানায় হত্যা, অস্ত্র আইন, চাঁদাবাজিসহ সাতটি মামলা রয়েছে। সাম্প্রতিকালে স্বর্গ শাজাহানপুরের জামাদারপুকুর ও শহরের খান্দার, মালগ্রাম এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তার মৃত্যুর ব্যাপারে সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী স্বর্গের বাবা শীর্ষ সন্ত্রাসী লিয়াকত আলী ২০০৬ সালে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। তার ছেলে স্বর্গ ছোট থেকেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় প্রোগ্রেস কোচিং সেন্টারের মালিকানা নিয়ে বিরোধে ২০১১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মোস্তাফিজুর রহমানের ভাগ্নে শরিকুল ইসলামকে হত্যার অভিযোগের ওঠে স্বর্গের বিরুদ্ধে। ২০১২ সালের ১২ জুন এলাকায় একটি চিত্ত বিনোদন অনুষ্ঠানে স্বর্গের চাচা সন্ত্রাসী আশরাফ আলীর সঙ্গে বাকবিতন্ডার পর খুন হন সরকারি শাহ সুলতান কলেজের ছাত্র নিরঞ্জন চক্রবর্তী দিপু। স্বর্গ এ মামলার আসামি ছিল। গত সাত বছরে মামলার সাক্ষ্য শুরু হয়নি। দিপুর বাবা খোকন চক্রবর্তী ছেলের খুনিদের বিচার পাবার আশায় আছেন।

স্বর্গ প্রায় সাড়ে ৩ মাস আগে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পায়। প্রভাবশালীরা তাকে হত্যার কাজে ব্যবহার করার জন্য জামিনে সহযোগিতা করে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবি করেছে। সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল নববর্ষের রাতে বগুড়ার নিশিন্দারা উপশহরে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম শাহীন খুন হন। অভিযোগ রয়েছে, স্বর্গ ভাড়াটিয়ে খুনি হিসেবে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। তবে জেল থেকে বের হওয়ার পর সে শীতবস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার দাবি করছিল।