জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, শহরের ৩১টি জায়গাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলায় তিন হাজার ৩৭৮ পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার লোক পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও তাদের সরানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রাণহানি এড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
‘কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। মরলে এখানেই মরবো’
মুসলিমপাড়া এলাকার ইসমাইল ও রমিজা বেগম পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত একই জায়গায় আবার নতুন বসতি গড়ে তুলে সেখানে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। তারা জানান, অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই মৃত্যুর শঙ্কা আছে জেনেও নিজেদের ভিটামাটি ছাড়বেন না তারা। যদি সরকার তাদের নিরাপদ জায়গার ব্যবস্থা করে দেয়, সেক্ষেত্রে চলে যাবেন।
ওই পরিবারের একজন বলেন, ‘সরকার আমাদের জায়গা ছাড়তে বলে, কিন্তু আমরা কোথায় যাবো, কোথায় থাকবো, সেই বিষয়ে কিছুই বলেনি। তাই আমরা কোথাও যাবো না। বাঁচলে এখানেই বাঁচবো, মরলে এখানেই মরবো।’ যুব উন্নয়ন ও মনতলা আদাম এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্র লাল চাকমা ও সোনা চন্দ্র চাকমা জানান, বর্ষা মৌসুমে জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় চিহ্ন দিয়ে চলে যায়। পাহাড়কে ঝুঁকিমুক্ত করে বসবাসের উপযোগী করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ বলেন, ‘পাহাড়ধস মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বছর ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অতিমাত্রায় বৃষ্টির ফলে পাহাড়ধস হলেও যাতে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক। শহরের ৩১টি জায়গাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।’ পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মরণ ফাঁদে নতুন বসতি
রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২০
এখনও পাহাড়ে ১৭ হাজার মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস
ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা, বন্ধ রাঙামাটির প্রধান সড়ক
রাঙামাটিতে টিলা সমান করে আশ্রয়হীনদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের সুপারিশ