রংপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তসহ বিচার দাবি

রংপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্ত ও বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলনরংপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাফিয়া খানমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সরকারি অর্থের অপচয়সহ সাত দফা অভিযোগ এনে তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেছেন জেলা পরিষদের ১৪ সদস্য। বুধবার (২৬ জুন) বিকালে পরিষদের হল রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন মিয়া। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের আরও ১৩ সদস্য।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, জেলা পরিষদের নির্বাচনের আড়াই বছর অতিবাহিত হতে চলছে, অথচ দৃশ্যমান কোনও উন্নয়ন হয়নি। চেয়ারম্যান সাফিয়া খানম একক কতৃত্ব তৈরি করে পরিষদকে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। তিনি নির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করেই দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, গত আড়াই বছরে জেলার ৮ উপজেলায় ঝড়ে ভেঙে পড়া মরা গাছ দেখিয়ে অর্ধ শতাধিক জীবন্ত গাছ একক সিদ্ধান্তে নামমাত্র মূল্যে তিনি বিক্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে তিনি পরিষদের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এছাড়া নগরীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত অর্ধশত কোটি টাকা মূল্যের দশমিক ৫৪ শতক সাবেক ওরিয়েন্টাল সিনেমা হলের সম্পদ, যা নিয়ে জনৈক মোস্তাফিজার রহমানের সঙ্গে জেলা পরিষদের হাইকোর্টে মামলা চলছে, সে বিষয়ে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে তিনি মামলা পরিচালনা করতে চাইছেন না। গত দুই বছরে অসহায় দরিদ্রদের চিকিৎসা ও শিক্ষা অনুদান দেওয়ার নামেও লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। গত আড়াই বছরে চেয়ারম্যান পরিষদের রাজস্ব আয়-ব্যায়ের হিসাব জানতে চাইলে তিনি তা দিতে চাইছেন না। বরং ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি নিয়মিত মাসিক সভাও করেন না। চেয়ারম্যান বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ২০১৭-১৮ অর্থবছরের শতকরা ৪০ ভাগ কাজ বাস্তবায়ন করেননি। ওই বছরের বিশেষ বরাদ্দের চার কোটি টাকা কোনও দরপত্র আহবান না করে ব্যাংকে ফেলে রেখেছেন ও লভ্যাংশ গ্রহণ করছেন। এ অর্থবছর শেষ হয়ে গেলেও সে টাকার কোনও হিসাব মিলছে না। এ ধরনের আরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জেলা পরিষদের সদস্যরা চেয়ারম্যানের দুর্নীতি ও লুটপাটের বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য সিরাজুল হক, আনোয়ার হোসেন, ফিরোজ হোসেন মিয়া, মোহসীনা বেগম, শাহ রফিকুল ইসলাম, রফিকুর রহমান, সেলিনা খাতুন, পারভীন আকতার, রিয়াজুল রনিসহ অন্যান্য সদস্যরা।

সার্বিক বিষয়ে জানতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাফিয়া খানমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, জেলা পরিষদের সদস্যদের অন্যায় আবদার রক্ষা না করায় তারা আমাকে হেয় করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।