কুড়িগ্রামে সব নদীর পানি বাড়ছে, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যার আশঙ্কা

সড়ক ডুবে যাওয়ায় নৌকায় চলাচল করছে গ্রামবাসীমাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত আর ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।  

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটিার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে জেলার নদ-নদীর পানি বাড়ায় নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপচরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গ্রামীণ সড়কসহ নিমজ্জিত হয়েছে নিচু এলাকার বীজতলা, ভুট্টা ও সবজির ক্ষেত। কুড়িগ্রাম সদরের চর যাত্রাপুর, পোড়ারচর, কালির আলগাসহ ব্রহ্মপুত্রের সবকটি চরের নিচু এলাকার ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এসব এলকার ঘরবাড়িতে পানি ওঠার উপক্রম হয়েছে।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তার ইউনিয়নের ৬টি ওয়ার্ডের শতাধিক বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে চর ভগবতীপুর, ঝুনকার চর, গোয়াইলপুরি, রলাকাটা, চর যাত্রাপুর ও চর পার্বতীপুর এলাকা উল্লেখযোগ্য। সম্ভাব্য বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উমর ফারুখ জানান, ধরলা নদীর পানি বেড়ে তার ইউনিয়নের সারডোব, সাত কালোয়া, খামার হলোখানা সহ বেশ কিছু চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এসব এলাকার বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করবে বলে জানান এই জনপ্রতিনিধি।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, ১২ জুলাই বিকালে কিংবা ১৩ জুলাই সকালে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই। সেক্ষেত্রে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার কিছু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। তবে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।

সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতিতে নৌডাকাতি প্রতিরোধসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জেলার সবকটি থানা পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান।