জামাতের জন্য প্রস্তুত দিনাজপুরের ‘গোড়-এ শহীদ’ ময়দান

গোড়-এ শহীদঈদুল আজহার জামাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে দিনাজপুরের ঈদগাহ মাঠ গোড়-এ শহীদ বড় ময়দান। গত রমজানের ঈদে এই মাঠে ছয় লাখেরও বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন বলে দাবি আয়োজকদের। এবারে এর চেয়েও বেশি সংখ্যক মুসল্লি নামাজ আদায় করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা। ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হবে জামাত। এতে ইমামতি করবেন মাওলানা শামসুল ইসলাম কাসেমী।

আয়োজকদের দাবি, এই ঈদগাহ মাঠটি আয়তনের দিক দিয়ে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড়। এবার এ ঈদগাহ ময়দানে থাকবে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। মাঠের আশপাশে র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারসহ সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গোড়-এ শহীদ বড় ময়দানের আয়তন প্রায় ২২ একর। ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাবের (যেখানে ইমাম দাড়াবেন) উচ্চতা ৪৭ ফিট। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ। এছাড়া ৫১৬ ফিট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো মিনার সিরামিক দিয়ে তৈরি। ঈদগাহ মাঠের দু’ধারে রয়েছে অজুর ব্যবস্থা। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং।

মুসল্লিদের দাবি, এখানে তাদের জন্য অজুখানা, টয়লেট স্থাপনসহ আরও পর্যাপ্ত সুবিধা থাকলে লোক সমাগম বৃদ্ধি পাবে। একইসঙ্গে যেকোনও নাশকতা এড়াতে নিরাপত্তা বলয় তৈরির দাবি তুলেছেন তারা।

ইতোমধ্যে ঈদের জামাত আয়োজনে ঈদগাহের ভূমি সমতলসহ ভরাট কাজ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ, মাইক লাগানো, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের যাবতীয় ব্যবস্থা, মিনারের রং করা, অস্থায়ী অজু ও পানির ব্যবস্থা এবং টয়লেট স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার (১০ আগস্ট) বিকালে বৃহত্তম ঈদগাহর উদ্যোক্তা ও পরিকল্পনাকারী জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম, পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েমসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন করেছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে মুসল্লিরা যেন বৃহত্তম এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন সে জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।

দিনাজপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল জানান, ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই আগাছা ও ময়লা পরিষ্কার ও মাঠ সমান করার কাজ চলছে। যাতে করে মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে পারেন সেজন্য ওজুখানা, অস্থায়ী টয়লেট স্থাপনের কাজও হয়েছে। আগত মুসল্লিদের কোনও ধরনের সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।

পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম জানান, বৃহত্তম এই ঈদের জামাতে নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পালন করবে র‌্যাব, পুলিশ, আনসার এবং সাদা পোশাকের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। পাশাপাশি পুরো মাঠটি সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। কয়েকটি প্রবেশদ্বার থাকবে যেগুলোতে তল্লাশি করে মুসল্লিদের প্রবেশ করানো হবে। জায়নামাজ ছাড়া অন্য কোনও বস্তু নিয়ে মুসল্লিরা মাঠে প্রবেশ করতে পারবেন না।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, গত রমজানের ঈদে ছয় লাখেরও বেশি মুসল্লির সমাগম হয়েছিল। এবার দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলাসহ আশপাশের জেলার মানুষজন যাতে অংশগ্রহণ করতে পারেন সে প্রস্তুতি রয়েছে।