নবগঙ্গা নদীতে ডোঙ্গা বাইচ

ডোঙ্গা বাইচছলাৎ ছলাৎ শব্দে মৃতপ্রায় নবগঙ্গার বুক চিড়ে বয়ে চলে তাল গাছের তৈরি ডোঙ্গা নৌকা। চলে একে অপরকে পেছনে ফেলে সামনের দিকে ছুটে চলার প্রতিযোগিতা। আর এতে উৎসাহ যোগান নদীপাড়ে থাকা দর্শনার্থীরা। এমনি এক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ঝিনাইদহ শহরের নবগঙ্গা নদীতে।

ধোপাঘাটা-গোবিন্দপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির আয়োজনে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে এ ডোঙ্গা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। শহরের গোবিন্দপুর এলাকা থেকে বাইচ শুরু হয়ে দুই কিলোমিটার দূরে ধোপাঘাটা এলাকায় শেষ হয়। এতে অংশ নেয় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ২২টি ডোঙ্গা নৌকা। এসময় নদীর তীরে দাঁড়িয়ে নানা বয়সী বিপুল দর্শক উপভোগ করেন এই ডোঙ্গা বাইচ।ডোঙ্গা বাইচ

শহরের ভূটিয়ারগাতী এলাকা থেকে এ প্রতিযোগিতা দেখতে আসা রুবেল হোসেন বলেন, ‘আমাদের নবগঙ্গা নদী মৃতপ্রায়। এখানে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা করা সম্ভব নয়। তাইতো এলাকার মানুষ ডোঙ্গা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এ প্রতিযোগিতা খুবই উপভোগ্য। না দেখলে বোঝা যাবে না বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য কতটা সমৃদ্ধ।’

একই এলাকার জিল্লুর রহমান বলেন, ‘দখল আর দূষণে নবগঙ্গা তার যৌবন হারিয়েছে। সরকার যদি এই দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদী খনন করে তাহলে এ ধরনের আয়োজন আরও ভালোভাবে করা সম্ভব।’

বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা আব্দুর সাত্তার বলেন, ‘আগে এই নদীতে প্রায়ই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হতো। এখন তা অনেকটা হারিয়ে গেছে। অনেকদিন পর আবারও প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে আমরা খুবই খুশি।’ডোঙ্গা বাইচ

বাইচের আয়োজক ধোপাঘাটা-গোবিন্দপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর বলেন, ‘আবহমান গ্রাম বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও নিজস্বতা ধরে রাখতে আর স্বল্প আয়ের মৎস্যজীবীদের একটু আনন্দ দিতে এই আয়োজন।’

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এ প্রতিযোগিতায় সবাইকে হারিয়ে প্রথম হন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর সাত্তার। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় মোবাইল ফোন, লাইট ও ছাতা।