গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা: স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি কারাগারে

পঞ্চগড়পঞ্চগড়ে কল্পনা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী মনিরুজ্জামান মনির, শ্বশুর আব্দুল জলিল ও শাশুড়ি মনোয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।

এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের এস আই শাহীনুজ্জামান শাহীন পঞ্চগড় সদর আমলি আদালতে ওই গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়ির সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। আদালতের বিচারক হুমায়ুন কবির সরকার আগামী ৬ নভেম্বর রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন নির্ধারণ করেন।

গতকাল রবিবার রাতে কল্পনার বাবা আব্দুল করিম বাদী হয়ে মনিরসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন-ওই গৃহবধূর স্বামী মনিরুজ্জামান মনির (৩৫), শ্বশুর আব্দুল জলিল (৬০), শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম (৫০) ও ননদ জেসমিন আক্তার (৩২)।

মামলা বিবরণ ও ওই গৃহবধূর পরিবার থেকে জানা যায়,  প্রায় আট বছর আগে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের সর্দারপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে মনিরুজ্জামান মনিরের সঙ্গে বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের কাউয়াখাল গ্রামের আব্দুল করিমের মেয়ে কল্পনা আক্তারের বিয়ে হয়। মনির পঞ্চগড়ের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাদের পাঁচ বছর বয়সী এক কন্যা শিশু রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য ও পারিবারিক কলহ চলছিল। কারণে-অকারণে মনির তাকে মারধর করতো। পারিবারিক কলহের জেরে কিছুদিন আগে কল্পনা স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে যান। গত সপ্তাহে দুই পরিবারের সমঝোতার মাধ্যমে কল্পনাকে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে আসে। রবিবার (৩ নভেম্বর) মনিরের বাড়ির পাশের একটি ধানক্ষেতে গলাকাটা অবস্থায় কল্পনার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।

হাফিজাবাদ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আমজাদ হোসেন জানান, কল্পনাকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। পরে তাকে ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার এসআই শাহীনুজ্জামান জানান, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, ওই গৃহবধূকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। ওই গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। স্বামী ও শাশুড়িকে সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেছি। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য ৬ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন।'