অবৈধ বালু উত্তোলনে ভাঙনের হুমকিতে গ্রাম, মন্দির ও ব্রিজ

ছোট ফেনী নদী তেকে অবৈধ বালু উত্তোলন


সোনাগাজীর ছোট ফেনী নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে বিষ্ণুপুর গ্রাম, কুঠির হাট ব্রিজ, ফসলি জমি, কালিবাড়ি মন্দির ও কুঠির হাট মহিপাল সড়কের একাংশ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুঠিরহাট কালিবাড়ি সংলগ্ন স্থানে নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

স্থানীয় জামশেদ আলম জানান, নদীর পানির চাপে সড়কের একাংশ আগেই ভেঙে গেছে। এরপর এলাকার মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট করে চলাচল করতে হচ্ছে। গত কয়েকমাস আগে সড়কটি মেরামত করা হয়। তবে বালু তোলার কারণে সড়কটি ফের ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর উদ্দিন বলেন, জোয়ার-ভাটার কারণে এলাকার বহু ঘর-বাড়ি, পুকুর, ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। নতুন করে মুছাপুর ক্লোজার নির্মাণের পর স্থানীয়রা কয়েকদিন স্বস্তিতে ছিলেন। তবে নতুন করে বালু তোলার কারণে নদী পাড়ের বাসিন্দারা ফের ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

অবৈধ বালু উত্তোলন করার অভিযোগ তুলে ওই এলাকার জাহিদুল আলম জানান, বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে ছোট ফেনী নদীর বুকে জেগে উঠা চর, ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত কুঠির হাট ব্রিজ, কুঠির হাট কালি মন্দির, কুঠির হাট-মহিপাল সড়কের একাংশ এবং বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দাদের ঘর-বাড়ি।

প্রকাশ্যে অবৈধ বালু উত্তোলনের ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সিদ্দিক আলম মামুনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, পার্থ সারথী কর, ইউপি সদস্য রিয়াদ চৌধুরী, সোহেল ও কাজী কামাল নামের কয়েকজন দুর্বৃত্ত দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বালু উত্তোলন করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। সড়ক, ব্রিজ, ফসলি জমি, সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি ও মন্দির ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে।

অবৈধ বালু উত্তোলনে সৃষ্টি হয়েছে ভাঙনইউপি সদস্য মো. ফারুক জানান, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে বালু তুলছে। তবে জেলা প্রশাসনের কোনও অনুমতি আছে কিনা তা আমার জানা নেই।

চরমজলিশপুর ইউপি চেয়ারম্যান এমএ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নদী থেকে বালু তোলার বিষয়টি শুনেছি। তবে কে বা কারা কীভাবে তুলছে তা জানা নেই। বিষয়টি দেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। উনাদেরকে জানানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব তাদের।

তবে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রিয়াদ চৌধুরী দাবি করেন, নদীতে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয়ভাবে বালু উত্তোলন করা হয়েছিল। এতে কোনও ভাঙনের সৃষ্টি হয়নি।

তবে এ কাজে প্রশাসনের কোনও অনুমতি ছিল না বলে স্বীকার করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তিনি নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন। খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।