খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কেজি ১৭০ টাকা

পেঁয়াজ

চট্টগ্রামে তিন দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে এখন প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায়। মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।

আড়তদার হাজি আমিরুজ্জামান অ্যান্ড সন্সের মালিক জাকারিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাজারে পেঁয়াজের সংকট। খাতুনগঞ্জে আজ (বৃহস্পতিবার) মাত্র ৮ থেকে ১০ গাড়ি পেঁয়াজ এসেছে। এসব পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায়।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে পেঁয়াজের স্টক শেষ। তাই পেঁয়াজ আমদানি কমে গেছে। আবার যেসব পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে এগুলোর মধ্যে কিছু পেঁয়াজ ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের সময় বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে বাজারে পেঁয়াজের সংকট হওয়ায় দাম বেড়ে গেছে।’ আমদানিকারকরা জানান,এখন মিয়ানমার থেকেই বাড়তি দামে পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে।

একই কথা জানান, খাতুনগঞ্জ ট্রেডিংয়ের মালিক আবুল বশর। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমদানিতেই এখন পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। তাই পাইকারিতে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের প্রতিকেজি পেঁয়াজ এখন পাইকারিতে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজ চার গাড়ি পেঁয়াজ নিয়ে এসেছি। পেঁয়াজগুলোর মান খুব একটা ভালো না। এরপরও আমদানিতে এসব পেঁয়াজের দাম পড়েছে প্রতিকেজি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। মিয়ানমারে পেঁয়াজের স্টক শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন তারা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।’

আবুল বশর বলেন, ‘তিন দিন আগে পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৯০ থেকে ১১০ টাকায়। এই তিন দিনে ধারাবাহিকভাবে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। গতকালও (বুধবার)প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।’

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জারিফ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘এখন আমদানিতে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। এ কারণে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। বেশি দাম দিয়েও এখন ভালো মানের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘কয়েকদিনের মধ্যে অন্যদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করলে বাজারে পেঁয়াজের সংকট দেখা দিতে পারে। কারণ, মিয়ানমারে যে পরিমাণ পেঁয়াজ স্টক করা ছিল। সেগুলো প্রায় শেষ। তাই তারা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।’

এদিকে, পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।

কাজির দেউরি বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনেছেন একটি টাইলস কোম্পানিতে কর্মরত এইচ এম বাপ্পু। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আজ এক কেজি পেঁয়াজ কিনলাম ২০০ টাকা দিয়ে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও এই পেঁয়াজ কিনেছি ১২০ টাকা দরে।’ সপ্তাহের ব্যবধানে হঠাৎ কেজিতে ৮০ টাকা দাম বেড়ে যাওয়ায় হতাশ এই বিক্রেতা।

তার অভিযোগ, প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়ি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘৩০ থেকে ৩৫ টাকা দামের একটি পণ্য দুই মাসে কীভাবে ২০০ টাকা হয় আমার বুঝে আসে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় করেটা কী? তারা কেন নির্বিকার।’