এমপি লিটন হত্যা মামলার রায় ২৮ নভেম্বর

গাইবান্ধার সাবেক এমপি মনজুরুল ইসলাম লিটনগাইবান্ধার সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। আগামী ২৮ নভেম্বর এই মামলার রায়ের দিন ধার্য করেছেন আদালতের বিচারক। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বেলা পৌনে ৩টার দিকে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই যুক্তিতর্ক শেষ হয়। বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক মামলার সাক্ষী ও আসামিদের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক গ্রহণ করেন।

এর আগে, সোমবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে আদালতে যুক্তিতর্ক শুরু হয়। প্রথমদিনে যুক্তিতর্ক শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনে প্রায় ৩ ঘণ্টা আদালতে যুক্তিতর্ক খণ্ডন করেন রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

যুক্তিতর্কের সময় আদালতে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) আবদুল কাদের খানসহ আট আসামির মধ্যে ছয় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। যুক্তিতর্কের সময় মামলার সাক্ষী ও নিহতের স্বজনরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, ‘সাক্ষ্য-প্রমাণসহ মামলার নানা দিক আলোকপাত করে আদালতে যুক্তিতর্ক তুলে ধরা হয়। যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আগামী ২৮ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন বিচারক। আশা করছি এ মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে আদালতে।’

এদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ বলেন, ‘এমপি লিটনকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে। এ মামলায় আসামি কাদের খানকে ফাঁসানো হয়েছে। আসামিদের নির্দোষ দাবি করে আদালতে বিস্তারিত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।’ মামলার রায় সন্তোষজনক না হলে উচ্চ আদালতে যাবেন বলেও জানান তিনি।

২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল আলোচিত এ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় এবং শেষ হয় ৩১ অক্টোবর। এ পর্যন্ত আদালতে মামলার বাদী, নিহতের স্ত্রী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৫৯ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গার মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এ ঘটনায় অজ্ঞাত পাঁচ-ছয় জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করে লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকুলী বুলবুল। তদন্ত শেষে কাদের খানসহ আট জনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া বাসা থেকে গ্রেফতারের পর থেকে কাদের খান গাইবান্ধা জেলা কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া আসামি কাদের খানের পিএস শামছুজ্জোহা, গাড়িচালক হান্নান, ভাতিজা মেহেদি, শাহীন ও রানা জেলা কারাগারে রয়েছেন। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে আসামি কসাই সুবল কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় মারা যান। এছাড়া ভারতে পলাতক রয়েছেন অপর আসামি চন্দন কুমার।

এছাড়া লিটন হত্যার ঘটনায় অস্ত্র আইন মামলায় গত ১১ এপ্রিল আবদুল কাদের খানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।