রাস্তা মেরামতের জন্য ডিসির কাছে শিশুর আবেদন

রাস্তা মেরামতের আবেদন নিয়ে ডিসির কাছে শিশুসাতক্ষীরার আশাশুনির সদর উপজেলার উত্তর বলাবাড়িয়া গ্রামের ধনঞ্জয়ের শিশু শ্রেণিতে পড়ুয়া সন্তান সৈকত প্রতিদিন কাদা-পানি ঠেলে আশাশুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়। সৈকতের মতো দুর্ভোগের শিকার হয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয় এলাকার শতাধিক শিক্ষার্থীকে। সবার কষ্টের কথা ভেবে এলাকাবাসীর পক্ষে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাফা কামালের কাছে রাস্তা মেরামতের আবেদন করেছে সৈকত। সোমবার বিকালে আশাশুনি উপজেলা চত্বরে জেলা প্রশাসকের কাছে এই আবেদন তুলে দেয় সে।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৫ সালের ১৬ মে জলোচ্ছাসে আশাশুনি সদর উপজেলার দয়ারঘাট স্লুইসগেট ভেঙে যায়। এসময় আশাশুনি সদরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। এরপর প্রায় আড়াই বছর জলাবদ্ধতা থাকে ওই এলাকায়। কিন্তু এরপর থেকে উত্তর বলাবাড়িয়া তিন কিলোমিটার রাস্তায় এখন মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি কেউ। এই এলাকায় কোনও স্কুল-কলেজ না থাকায় এখানকার শিক্ষার্থীদের আশাশুনির বিভিন্ন স্কুল ও সরকারি স্কুলে যেতে হয়। কিন্তু রাস্তার কারণে প্রতিদিন বিপাকে পড়তে হয় তাদের। এলাকার কেউ অসুস্থ হলে তাকে নেওয়ার জন্য যানবাহনও প্রবেশ করতে পারে না। সুপেয় পানির অভাবও তাদের নিত্যা দিনের সঙ্গী।

আশাশুনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী জানান, এলাকাবাসীর পক্ষে আশাশুনি উপজেলা চত্বরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাফা কামালের কাছে রাস্তা মেরামতের জন্য আবেদন দেয় শিশু সৈকত। আবেদন পেয়ে জেলা প্রশাসক আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলিফ রেজাকে উত্তর বলাবাড়িয়া গ্রামের রাস্তা দ্রুত সংস্কারের নির্দেশ দেন।

সৈকতের বাবা উত্তর বলাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ধনাঞ্জয় মন্ডল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ডিজিটালের বাংলাদেশের ছোঁয়া আমাদের এলাকায় এখনও লাগেনি। ৯৫ সালে বাধ ভেঙে যাওয়া পর আর রাস্তা তৈরি হয়নি। মাছের ঘেরের বেড়িবাঁধ দিয়ে যাতায়াত করি। এই এলাকায় ৬'শ মানু‌ষের বসবাস। কেউ অসুস্থ হলে বাঁশের সঙ্গে কাপড় বেঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে যেতে হয়। এখানে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। পানি আনতে অনেক দূরে যেতে হয়। এই রাস্তায় কাদামাটি, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমার ছেলে সৈকতকে কাঁধে করে নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। এক সময় মাটি দেওয়া হয়েছিল, সব ধ্বংসে গেছে। প্রশাসনের কাছে দ্রুত এই রাস্তা সংস্কারের দাবি করছি।’

আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার অসীম বরণ চক্রবর্তী বলেন, ‘চলতি বছরের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সময় আমি এই এলাকা পরিদর্শন গিয়ে জানতে পারি এই এলাকা গত ২৪ বছর ধরে অবহেলিত। তাদের  দুঃখের কথা কেউ ভাবেনি। নির্বাচনে জয়ী হওয়া হওয়ার পর এই গ্রামের রাস্তাঘাট এবং সুপেয় পানির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরে কথা বলেছি।’