অবশেষে সেই আওয়ামী লীগ নেতার আত্মসমর্পণ

আদালতে আত্মসমর্পণকারী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস (মাঝে)উল্লাপাড়ায় গৃহবধূকে লাঞ্ছিত ও চুল কেটে নির্যাতনের প্রধান আসামি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস অবশেষে সিরাজগঞ্জের আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে আইনজীবীর মাধ্যমে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। আইনজীবী তার জামিনের আবেদন করলে বিচারক মো. নজরুল ইসলাম তা নাকচ করে দেন। দুপুরে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। কোর্ট সাব ইন্সপেক্টর (সিএসআই) প্রদ্যুত কর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক চাপে বাধ্য হয়ে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানান তিনি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। রিমান্ড শুনানির দিন এখনও ধার্য হয়নি।
প্রসঙ্গত, ‘চারিত্রিক স্খলন’ এর কথিত অভিযোগে গত ২৫ নভেম্বর আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুসসহ তার সহযোগীদের হাতে লাঞ্ছিত হন এক গৃহবধূ। এমন কি বটি ও দা দিয়ে তার চুল কেটে ফেলা হয়। ওই গৃহবধূর কাটা চুল হাতে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন আব্দুল কুদ্দুস। এ ঘটনার ভিডিও পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বাদী হয়ে গত ২ ডিসেম্বর উল্লাপাড়া থানায় আবদুর রশিদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
অভিযোগ রয়েছে ‘পুলিশ শুরু থেকে বিষয়টি আমলে নেয়নি। এরপর গৃহবধূ নতুন করে লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যান। তাকে হুমকি দিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়।’
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ইশরাত হাসান নামে ঢাকার এক আইনজীবী স্বপ্রণোদিত হয়ে নির্যাতিত গৃহবধূকে নিয়ে প্রকাশিত খবর ও ভিডিও হাইকোর্টে প্রদর্শন করেন। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল হাসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের দ্বৈত বেঞ্চ ওই গৃহবধূর নিরাপত্তায় বুধবারের (১১ ডিসেম্বর) মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের পদক্ষেপ জানতে চান। আদালতের আদেশের পর ওই গৃহবধূর নিরাপত্তা জোরদার করে স্থানীয় প্রশাসন।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে বলেন, বুধবারের মধ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে প্রতিবেদন উচ্চ আদালতে পাঠানো হবে।