তবিবুর রহমান জানান, কালো ভালুকের বাচ্চা প্রসবের ঘটনায় তারা আনন্দিত। বাচ্চাটি সুস্থ আছে। তবে বাচ্চাটি মাদা নাকি মাদি তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। ভালুক শাবকটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
পার্কের বন্য প্রাণী তত্ত্বাবধায়ক আনিসুর রহমান জানান, শনিবার তারা ভালুক শাবকটির কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। ওই সময়ই ধারণা করছিলেন কোনও একটি ভালুক বাচ্চা প্রসব করেছে। সোমবার বিকালে বাচ্চাটি দেখে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। জন্মের পর ভালুক বেষ্টনির ভেতর ঝোপের মধ্যে বাচ্চা নিয়ে লুকিয়ে ছিল মা ভালুক। খাবার দেওয়া হলে গত দু'দিন মা ভালুক সামনে আসলেও বাচ্চাটি আসেনি। তাই গর্তের ভেতর অবস্থান করা ভালুকের কয়টি বাচ্চা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এদিকে ভালুকের পালে প্রথমবারের মতো বাচ্চার জন্ম হওয়ায় নতুন সম্ভাবনা দেখছেন সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরও জানান, ২০১৩ সাল থেকে কয়েক দফায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে একটি পশু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আনা হয় এশীয় জাতের কালো ভালুক। সদ্য জন্ম নেওয়া বাচ্চাসহ পার্কে বর্তমানে ভালুকের সংখ্যা ১২টি। এর মধ্যে চারটি মাদি ভালুক। গর্ভধারণের আট মাস পর বাচ্চা প্রসব করে। ভালুক ২০ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে। তবে আবদ্ধ পরিবেশে ৩০ থেকে ৩৫ বছর বেঁচে থাকে।
এবারই প্রথম সাফারি পার্কে কালো ভালুক বাচ্চা প্রসব করেছে। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা এই প্রাণী সংরক্ষণে প্রজননের উদ্যোগ নেয় তারা। অবশ্য আবদ্ধ অবস্থায় কালো ভালুকের বাচ্চা প্রসবের ঘটনা বাংলাদেশে এটি দ্বিতীয়। এর আগে ২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে একটি কালো ভালুক বাচ্চা দিয়েছিল।
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসিএফ) তবিবুর রহমান বলেন, সিংহ পরিবারেও নতুন অতিথির আগমন ঘটেছে। সোমবার দুপুরের দিকে সিংহের বেষ্টনিতে মা সিংহকে বাচ্চা নিয়ে ঘুরতে দেখা যায়। সিংহ শাবকের জন্মের সময় সাধারণত চোখ ফুটে না। এদের চোখ ফুটতে ৩ থেকে ১১ দিন সময় লাগে। নতুন জন্ম নেওয়া শাবকটির চোখ ফুটে গেছে, দেখে মনে হচ্ছে শাবকটির বয়স অন্তত ১৫ দিন। জন্মের সময় এদের ওজন ১-৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ সময় সিংহ তার শাবককে জঙ্গলের আড়ালে রেখে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখে এবং সেখানে অন্য সঙ্গীদের পর্যন্ত যেতে দেয় না।
এ নিয়ে পার্কে সিংহের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬টিতে। তবে নতুন শাবকটি পুরুষ না মাদি তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ পর্যন্ত সাফারি পার্কে ১১টি সিংহ শাবকের জন্ম হয়েছে। তবে বিভিন্ন ধাপে এ পার্ক থেকে ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানায় চারটি সিংহ সরবরাহ করা হয়েছে। সদ্য জন্ম নেওয়া ভালুক ও সিংহ শাবকের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে বলে জানায় পার্ক কর্তৃপক্ষ।