সে সময় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মোর্শেদ মাহমুদ চৌধুরী, মোরশেদ আলম, গোলাম কিবরিয়া, জাহেদুল ইসলাম, অফিস সহকারী সাহাবুদ্দিন ও ইয়াসিন আলী উপস্থিতিতে ঢাকা থেকে আসা নির্বাহী প্রকৌশলী হারিজুর রহমান, উপ-পরিচালক তাজিমুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বাড়ি দুটি ভাঙার পর বাড়ির মালিক আবু বকর সিদ্দিক সুমন ও আলাউদ্দিন মিলে দিনাজপুরে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে নির্বাহী প্রকৌশলী মোরশেদ আলম ও গোলাম কিবরিয়া জেলা প্রশাসকের কাছে যেতে বলেন। পরে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করা হলে গত ২৩ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একটি চিঠি দেন। কিন্তু এরপরেও গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ সঠিক ব্যবস্থা না নিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেন মালিকরা।
একটি বাড়ির স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দিন বলেন, ‘পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে ওই জায়গাটি আমার স্ত্রী মাসুমা বেগমের। সেখানে কয়েক বছর আগে চারতলা ভিত্তি দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কোনও প্রকার নোটিশ না দিয়েই গত ২৬ নভেম্বর বাড়িটি ভেঙে দেয়। এতে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন ওই জায়গাটি আমরা বুঝে চাই। একই সঙ্গে ভেঙে ফেলারও ক্ষতিপূরণও দাবি করছি। আর এভাবে খামখেয়ালি করে স্থাপনা ভেঙে ফেলার ব্যাপারেও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’
আলাউদ্দিনের স্ত্রী মাসুমা বেগম বলেন, ‘ভাঙার সময় বারবার বলা হলেও তারা কোনও কথা শোনেনি। ওই ৪ শতক জায়গা গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণ করেনি। জায়গাটির খাজনা, খারিজ সবই আমাদের। কিন্তু এরপরও ভেঙে ফেলার কোনও মানে হয় না। এই ঘটনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
অপর বাড়ির মালিক শিক্ষানবিশ আইনজীবী আবু বকর সিদ্দিক সুমন বলেন, ‘ওই জায়গাটি আমার বাবা আতাউল মাওলার। সেখানে আমাদের ১০১ শতক জায়গার মধ্যে ৬০-৬১ সালে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৯৭ শতক জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়। বাকি ৪ শতক জায়গা আমাদের দখলেই ছিল। এর আগে ’৯০ ও ’৯৪ সালে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কাছে ওই ৪ শতক জায়গা তাদের নয়, এমন অনাপত্তিপত্র নিয়েছি। গত কয়েক বছর আগে আমরা সেখানে স্থায়ীভাবে চারতলা ভিত্তি দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করি। কিন্তু গত ২৬ নভেম্বর বাড়ি ভেঙে ফেলেন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা। এখন তারা আমাদের কোনও কথাই শুনছে না। বারবার তাদের কার্যালয়ে ঘোরাঘুরি করা হলেও কোনও প্রতিকার মিলছে না।’
এ ব্যাপারে দিনাজপুর জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মোর্শেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘৪ শতক জায়গার ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়েছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপরই কেন্দ্রীয় সার্ভেয়ার কাগজপত্র নিয়ে গেছেন। তাদের অভিযোগের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে নকশা ও মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী জায়গাটি আমাদের। এরপরও সিএস ও আরএস দেখে জায়গাটির ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’ এ বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।