কুবির সমাবর্তনে ভুলে ভরা সনদপত্র

সনদপত্রে বানান ভুলকুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সমাবর্তন পাওয়া শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে ভুলে ভরা মূল সনদপত্র। যেখানে এ পর্যন্ত দুইটি বিভাগ ও দুইটি হলের নামের বানানে ভুল পাওয়া গেছে। সমাবর্তনের মাধ্যমে পাওয়া মূল সনদপত্রে এ ধরনের ভুলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন সনদপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে সমাবর্তন উপলক্ষে গঠিত সনদ তৈরি ও বিতরণ উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার বলেছেন, এটি গুরুতর কোনও সমস্যা নয়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ও তাদের মূল সনদ দেখে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ অন্তর্ভুক্ত লোক প্রশাসন বিভাগের ইংরেজি নামের বানানে public এর জায়গায় pablic লেখা হয়েছে। এছাড়া ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের নামের বানানেও ভুল পাওয়া গেছে। বিভাগটির একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের বিভাগের নামের বানানে অ্যাকাউন্টিং ও অ্যান্ড শব্দ দুটির মাঝে কোনও স্পেস না রেখে এক সঙ্গে  (Accountingand) লেখা হয়েছে।

এছাড়া ছেলেদের আবাসিক হল শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের নামের বানানেও ভুল পাওয়া গেছে। কোনও কোনও সার্টিফিকেটে শহীদ বানান লেখা হয়েছে (shahid) আবার কোথাও লেখা হয়েছে (Shaheed)। এছাড়া দত্ত শব্দটির নামের বানানেও কোথাও  Datta আবার কোথাও Dutta লেখা হয়েছে।

ভুল বানানভুল করা হয়েছে মেয়েদের আবাসিক হল নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের নামের ইংরেজি বানানেও। হলটির নামের বানানে (Nawab Faizunnesa Chowdhurani) এর পরিবর্তে (Nawab faizunnissa Choudhurani) লেখা হয়েছে।

সনদপত্রে ভুলের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ভুক্তভোগী লোক প্রশাসন বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তফা কামাল বলেন, সনদ তৈরিতে দায়িত্বপ্রাপ্তরা কোন যোগ্যতায় চাকরি পায় তা নিয়ে প্রশ্ন জাগে।

হলের নামের বানান ভুল নিয়ে রসায়ন বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার বলেন, আমরা মেয়েরা সবসময়ই সকল অফিসিয়াল কাজে-কর্মে আমাদের হলের নাম ইংরেজিতে Nawab Faizunnesa Chowdhurani Hal লিখে এসেছি। এমনকি গুগল ম্যাপেও একই রকম বানান। কিন্তু আমাদের সার্টিফিকেটে দেখি অন্যরকম। নামের বানান ভুল অবশ্যই বড় একটা ভুল। সার্টিফিকেটে বানান ভুল হলে পরবর্তীতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে। আমরা প্রশাসনের কাছে এতটা অসতর্কতামূলক কর্মকাণ্ড আশা করিনি।

সমাবর্তন উপলক্ষে গঠিত সনদ তৈরি ও বিতরণ উপ- কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার জানান, ‘এটা গুরুতর কোনও সমস্যা না। আমরা পূর্ববর্তী সাময়িক সনদপত্র জমা রেখে শিক্ষার্থীদের মূল সনদপত্র দিয়েছি। আগের সনদপত্রে কোথাও ভুল থাকলে সেটি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমরা জানতে চেয়েছি। অনেকেই হয়তো বলে নাই বা পরীক্ষা দফতরের টাইপিং মিসটেক হয়ে ভুল হতে পারে।’

ভুলের সমাধানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যাদের সমস্যা হয়েছে তারা আমাদের জানালে আমরা তা সমাধান করে দেবো। সেক্ষেত্রে মূল সনদ যেটা দিয়েছি সেটা জমা রেখে তথ্য ঠিক করে একই সিরিয়ালে আবার মূল সনদ দেওয়া যাবে।

সনদপত্রে ভুল বানানবিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের জানান, মূল সনদপত্র তৈরির আগে বারবার চেক করা হয়েছে। কোনও ভুল থাকার কথা নয়। তারপরও যদি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল হয়ে থাকে তবে তা সংশোধন করে আগেরটি বাতিল করে নতুন সনদপত্র দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে উপাচার্যের সঙ্গে কথা হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে। উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ সমাবর্তনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচ থেকে অষ্টম ব্যাচ পর্যন্ত মোট ৫ হাজার ৬৪৮ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি দেন।