মাগুরায় জনপ্রিয়তা পাচ্ছে পারিবারিক সাক্ষরতা কর্মসূচি

এ কর্মসূচিতে বয়োজ্যেষ্ঠ কেউ নিরক্ষর থাকলে পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্যও তাকে শিক্ষা প্রদান করেমাগুরায় জনপ্রিয়তা পাচ্ছে পারিবারিক সাক্ষরতা কর্মসূচি। এ কর্মসূচিতে পরিবারের নিরক্ষর সদস্যের শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন পরিবারের সদস্যরাই। সেক্ষেত্রে শুধু জ্যেষ্ঠ সদস্যই শিক্ষকের ভূমিকায় থাকেন না। বয়োজ্যেষ্ঠ কেউ নিরক্ষর থাকলে পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্যও তাকে শিক্ষা প্রদান করে থাকে। 

নিরক্ষরতা ঘোচাতে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে পরিবারের সদস্যরাই– এরকম ভাবনা থেকেই মাগুরা উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মসূচির উপপরিচালক সরোজ কুমার দাস পারিবারিক স্বাক্ষরতা কর্মসূচির উদ্ভাবন করেন। শালিখায় পরীক্ষামূলকভাবে এ কর্মসূচির সূচনা করেছে জেলার দুটি বেসরকারি সংস্থা রোভা ও ইসাডো। উপজেলার ১৫০টি পরিবারকে নিয়ে তারা শুরু করেছে এ সাক্ষরতা অভিযান।

লুডু, ক্যারাম ও বিভিন্ন সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গুনতে শেখানো হয়শুধুমাত্র অক্ষরজ্ঞান দেওয়ার মধ্যেই এ শিক্ষা সীমাবদ্ধ নয়। ধর্মীয় শিক্ষা, এমনকি নৈতিক শিক্ষাও এর একটি অংশ। যৌতুক, বাল্যবিয়ে, মাদকাসক্তিসহ সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতির কুফল সম্পর্কেও অবহিত করা হয়। শিক্ষা উপকরণ হিসেবে বিভিন্ন খেলাধুলার সামগ্রীও ব্যবহার করা হয়। লুডু, ক্যারাম, বাগাডুলিসহ বিভিন্ন সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গুনতে শেখানো হয়।

শালিখা উপজেলার গ্রামের গৃহবধূ নাসরিন বেগম বলেন, ‘আগে আমি সম্পূর্ণ নিরক্ষর ছিলাম। আমার মেয়ে এখন আমাকে পড়ায়। এখন আমি সবকিছু লিখতে ও পড়তে পারি।’

আশি বছর বয়সী শালিখা উপজেলার হরিসপুর গ্রামের মনু মণ্ডল বলেন, ‘সারাজীবন পড়াশোনা করতে পারিনি। মনে অনেক ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা করার। জীবন-জীবিকার কারণে তা সম্ভব হয়নি। শেষ জীবনে এসে তা সম্ভব হচ্ছে নাতির মাধ্যমে। এখন আমি লিখতে-পড়তে পারি।’

মাগুরার সহকারী শিক্ষা অফিসার আলমগীর কবির বলেন, ‘পারিবারিক শিক্ষাদান পদ্ধতি অনেক দেশেই আছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও জাপানে এটি খুব জনপ্রিয়। মাগুরার শালিখা উপজেলায় এ পদ্ধতিতে শিক্ষাদান কর্মসূচি চালু হয়েছে– এটি খুব আনন্দের ব্যাপার। আশা করি, এটি খুবই জনপ্রিয় এবং সফল কর্মসূচিতে রূপ নেবে।’