পদ্মা সেতু: ছুটিতে যাওয়া ৩৩২ চীনা কর্মীর কেউ করোনা আক্রান্ত নন

পদ্মা সেতুপদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণে কমপক্ষে ৭১৩ জন চীনা কর্মী নিয়োজিত আছেন। এর মধ্যে ৩৩২ জন কর্মী চীনা নববর্ষ পালনের জন্য নিজ দেশে গিয়েছিলেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত সতর্কতার কারণে তারা সেখানে আটকা পড়েছেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পে কাজে ফিরতে পারছেন না। তবে তাদের কেউই করোনা আক্রান্ত হননি বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের। তিনি আরও জানান, এই চীনা কর্মীরা শিগগির কাজে না ফিরতে পারলে পদ্মা সেতুর কাজের গতি কমবে।

প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের  জানান, ‘চীনের উহানে পদ্মা সেতুর হেড অফিস। কাজেই কর্মচারীরা উহানের আশেপাশেরই বাসিন্দা। ছুটি কাটাতে যারা দেশে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে ৩৩২ জন এখনও কাজে ফিরতে পারেননি। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে না ফিরলে পদ্মা সেতুর কাজের গতি কমে যাবে।’পদ্মা সেতু

তিনি আরও বলেন, ‘৩৩২ জনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। এখানে যে চীনা কর্মীরা আছেন তারাই বিভিন্ন মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। আমরা জানতে পেরেছি, ছুটিতে চীনে থাকা ৩৩২ জনের কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে চীনে এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে তাদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আবার নিজে আক্রান্ত না হলেও যদি কারও কোন স্বজন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে তাদের মন খারাপ থাকবে। এখানে কাজ করলেও তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। এতে করে কাজে তাদের পুরোপুরি মন বসবে না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চীনারাও বিকল্প উপায় খুঁজছে যেন পদ্মা সেতুর কাজের গতি কমে না যায়। যেমন, স্থানীয়দের বেশি করে কাজে যুক্ত করা বা অন্য দেশ থেকে কর্মী এনে কাজ করানো যায় কিনা সেটাও চীনারা চিন্তাভাবনা করছেন।’পদ্মা সেতু

এই কর্মকর্তা আরও জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে ২১ ফেব্রুয়ারি বসছে পদ্মা সেতুর ২৫ তম স্প্যান। ৫-ই আইডি নম্বরের স্প্যান পিয়ার-২৯ এবং ৩০ এর ওপর স্থাপন করা হবে। তাছাড়াও সেতুর বাকি ১০, ১১, ২৬ এবং ২৭ এই চারটি পিয়ারের কাজ শেষ পর্যায়ে।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে বসেছিল পদ্মা সেতুর ২৪তম স্প্যান। ২৪তম স্প্যান বসানোর পর সেতুর তিন হাজার ৬০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি দ্বিতল হবে, যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।