খাবারের কষ্ট হচ্ছে বলে হোম কোয়ারেন্টিন ছেড়ে বাড়িতে, এলাকায় আতঙ্ক

ব্রাহ্মণবাড়িয়াব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার দুই সরকারি কর্মকর্তার অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ইতালিপ্রবাসীদের সংস্পর্শে আসার পর দুই জনই বেশ কিছুদিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগছেন। করোনাভাইরাস সতর্কতা হিসেবে তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হলে একজন খাবারের কষ্টের কথা বলে বাঞ্ছারামপুরে নিজের বাড়ি চলে যান। তবে অবস্থার অবনতি হলে তাকে কোভিড-১৯ পরীক্ষার  জন্য বুধবার দুপুরে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই কর্মকর্তার বাঞ্ছারামপুরের বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরেকজন কয়েকদিন ধরে ঢাকায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। তারও নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

এদিকে ওই দুই কর্মকর্তার অসুস্থতার খবরে আখাউড়া ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

একাধিক সূত্র জানায়, আখাউড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগ এবং জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগে কর্মরত ওই দুই কর্মকর্তাসহ আরেকজন নারী কর্মকর্তা গত ২১ মার্চ আখাউড়া উপজেলার তন্তর বাজারে পরিদর্শনে যান। এর দুইদিন পর থেকে প্রকৌশল বিভাগের দুই কর্মকর্তার শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। এর মধ্যে একজনের অবস্থা একটু বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে সতর্ক করে দিয়ে হোমকোয়ারেন্টিনে থাকার কথা বলা হয়। তিনি হোমকোয়ারেন্টিন না মেনে খাবার অসুবিধা হচ্ছে বলে নিজ গ্রামের বাড়ি বাঞ্চারামপুরের রূপসদীতে চলে যান। আরেকজন ঢাকায় চলে যান।

বাঞ্ছারামপুরে গিয়ে ওই ব্যক্তির অবস্থা খারাপ হলে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি জানাজানি হয়। গত মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আল-মামুন ওই কর্মকর্তার বাড়ি যান। পরে তার বাড়িতে লাল কাপড় দিয়ে নিশানা টানানো হয়। পাশাপাশি বাড়ির সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। বুধবার দুপুরে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে বাঞ্ছারামপুর থেকে সেই সরকারি কর্মকর্তাকে ঢাকায় জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উদ্দেশে পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আল-মামুন বলেন, ‘ওই কর্মকর্তার শরীরে উচ্চ মাত্রায় জ্বর ও কাশি আছে। তবে তার অবস্থা স্থিতিশীল। ওই রোগীর বাড়িতে গিয়ে লাল নিশানা টানানো হয়েছে।’

এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নাসির উদ্দিন সারোয়ার জানান, ’ওই কর্মকর্তা তার কর্মস্থলে ইতালি ফেরতদের সংস্পর্শে গিয়েছিলেন। তখনই তাকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়। কিন্তু তিনি কোয়ারেন্টিন না মেনে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে এসে শরীর খারাপ হওয়ায় নমুনা সংগ্রহের জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সবাইকে সচেতন করতে তার বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, ’করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের কিট আমাদের কাছে নেই। সেজন্য ওই ব্যক্তিকে আইইডিসিআর-এ পাঠানো হচ্ছে। সেখানেই তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়।’