লালমনিরহাটে ত্রাণের দাবিতে কর্মহীন মানুষের বিক্ষোভ

92929057_227737794974737_1886086621195927552_nত্রাণ সহায়তার দাবিতে লালমনিরহাট জেলা শহরের আদর্শ কলোনির কর্মহীন মানুষেরা বিক্ষোভ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের অধিবাসীরা ত্রাণের দাবিতে এই বিক্ষোভ করেন।

এ পর্যন্ত তারা কোনও ধরনের সরকারি অথবা বেসরকারি ত্রান ও খাদ্য সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করে এই বিক্ষোভ করেন। এসময় শতাধিক কর্মহীন মানুষ লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে অবস্থান নেন। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ঘরে ফেরানোর চেষ্ঠা করলে তারা আরও বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে সহকারি কমিশনার শহিদুল ইসলাম সোহাগ ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুদ্ধ কর্মহীন শ্রমজীবি মানুষদের নিত্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ দেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা ঘরে ফিরে যান।

এদিকে বুধবার (৮ এপ্রিল) সদর উপজেলার হাড়ীভাঙ্গা এলাকায় সরকারি ত্রাণের দাবিতে ওই এলাকার শতাধিক কর্মহীন মানুষ বিক্ষোভ করেন। লালমনিরহাট সদর ইউএনওর নির্দেশমতো ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর কর্মহীন মানুষের তালিকা করে করেন এবং রাতেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার রায় ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন তালিকা অনুযায়ী  ত্রাণ প্রদান করেন।

লালমনিরহাট বালাটারী আদর্শ কলোনীর দিনমজুর আয়েশা বেগম (৪৫) জানান, দুদিন থেকে না খেয়ে রয়েছি। কেউ সহযোগিতা করেনি, কাউন্সিলর ভোটার আইডির ফটোকপি নিয়েছে অনেকদিন হলো কোনও ত্রাণ পাইনি, ওএমএসের চালও নিতে পারছি না বলেই ক্ষুধার জ্বালায় রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।

চা বিক্রেতা রেজাউল করিম বলেন,  আমার ঘরে যে খাবার ছিলো তা শেষ হয়ে গেছে। এখন আমাদের কাজ কাম সব বন্ধ। আমাদের কে খাওয়াবে। এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি ভাবে আমরা কোনও সহযোগিতা পাইনি।

রিক্সা চলক ফরহাদ (২৫) জানান, সবাই শুধু আশ্বাস দেয় কেউ আর ত্রাণ দেয় না। একবার, দুবার নয় তিনবার আইডি কার্ড নিয়েছে কাউন্সিলর মুকুল কিন্তু কোনও প্রকার ত্রাণ দেয়নি।

এ বিষয়ে কাউন্সিলর মুকুল মিয়া বলেন, বালাটারী আদর্শ কলোনীতে চারশ’ ৫৫টি পরিবার রয়েছে। তারা সকলেই দিনমজুর। এসব লোকের মধ্যে আমি মাত্র ৪০টি পরিবারকে তিনি ত্রাণ সহযোগিতা দিতে পেরেছি। তাই তারা বিক্ষোভ করেছে।

তিনি জানান, পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডটি অনেক বড়। এখানে দুটি কলোনি রয়েছে। কলোনি ছাড়াও অনেক দিনমজুর ও কর্মহীন মানুষ রয়েছে। তবে আমি স্লিপ পেয়েছি মাত্র ১৮৯টি। বরাদ্দ না থাকলে আমার কিইবা করার আছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, যদি কেউ ত্রাণ না পেয়ে থাকে। যোগ্য লোক দেখে আমরা তাকে ত্রাণ দিবো। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ রয়েছে। আমরা সকল ইউপি মেম্বার, ইউপি চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও পৌর কাউন্সিলরদের বলেছি তালিকা করার জন্য। তালিকা পেলেই ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।