আম্পান মোকাবিলায় প্রস্তুত উপকূলীয় এলাকা, স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশ

আশ্রয়কেন্দ্রঘূর্ণিঝড় আম্পান আরও ঘণীভূত হয়ে শক্তি সঞ্চয় করে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৯ মে) মধ্যরাত থেকে ২০ মে বিকাল বা সন্ধ্যার মধ্যে এটি বাংলাদেশের উপকূলে অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এর প্রভাবে সাগর বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। একই কারণে উপকূলীয় জেলাগুলো, দ্বীপ ও চরগুলোতে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। সেই সাথে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। করোনা দুর্যোগের মধ্যেই ধয়ে আসছে এই দুর্যোগ। আম্পান মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকাগুলো নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে রিপোর্ট করা হলো।  

চট্টগ্রাম

ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় চট্টগ্রামে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। আম্পান আঘাত হানা আগেই উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নিতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩ হাজার ৯৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সামাজিক দূরুত্ব মেনে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে উপকূলীয় এলাকার মানুষকে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন।

তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার ৩ হাজার ৫১৯টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে তাদেরকে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হবে।’
ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী স্বাস্থ্য সেবার জন্য ২৮৪টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রেখেছে সিভিল সার্জন অফিস।  সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আম্পান পরবর্তী চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমাদের ২৮৪টি মেডিক্যাল টিম মাঠে কাজ করবে। এর পাশাপাশি জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদানে পর্যাপ্ত ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ রাখা হয়েছে।’

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা প্রস্তুতি সভা
ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় নগরী কন্ট্রোল রুম খুলেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। করপোরেশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের নির্দেশে সোমবার সন্ধ্যায় কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। মেয়র নিজেই এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে আম্পানের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করবেন। উপকূলীয় এলাকার লোকজনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য ওই সব এলাকায় সিটি করপোরেশন পরিচালিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হবে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুযোর্গ পূর্ববর্তী, দুযোর্গকালীন ও দুযোর্গ পরবর্তী সময়ে উপকূলীয় এলাকার মানুষ অবস্থান করতে পারবেন।
সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি আম্পান মোকাবিলায় চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সদরদফতরে দামপাড়ায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। সিএমপি থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় আগে ও পরে নগরবাসী যেকোনও ধরনের সেবা গ্রহণের জন্য এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করতে পারবেন। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি টিম প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত ফোন রিসিভ করবেন এবং সেই অনুযায়ী তাৎক্ষণিক সমাধানের ব্যবস্থা করবেন।

ক্ষ্মীপুর 
করোনা মহামারির মধ্যে ঘূর্ণিঝড়  আম্পান উপকূলবাসীর জন্য আরও বড় বিপদ হয়ে আসছে। এজন্য লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন থেকে ২০০টি আশ্রয়নকেন্দ্র এবং ৬৬টি মেডিক্যাল টিম গঠন প্রস্তুত রেখেছে। জেলায় এখন ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে, সিগনাল বাড়লেই নদীর বিভন্ন জায়াগায় জেগে ওঠা চর থেকে মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে।
মানুষ যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া গবাদি পশুর জন্য আলাদা ভাবে আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা রাখা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল।  র্ঘূণিঝড় আম্পান প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রয়েছে বলে জানান তিনি।
জেলা হট লাইন চালু করা হয়েছে। দুযোর্গ পরবর্তী সময়ে রাস্তাঘাট ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ বিভাগ প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নে আম্পান প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আশ্রয়কেন্দ্র

নোয়াখালী 
নোয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপকূলীয় উপজেলা হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাটের ৩২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র, ৬ হাজার ৭০০ স্বেচ্ছাসেবক, তিন শতাধিক রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মী ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকার স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারগুলোর চাবি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডকে উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধগুলো দেখাশুনা করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার করোনা আক্রান্ত রোগী এবং লকডাউন করা বাড়ির লোকজনকে নিকটবর্তী আইসোলেশন কেন্দ্রে পাঠানে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের জন্য বিশেষ কক্ষে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে ৪ নং সতর্ক সংকেত দেখানো হচ্ছে। আবহাওয়ার অবস্থা অবনতি হলে, এলাকার লোকজন ও গবাদিপশুকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে। 

বরিশাল

বরিশাল জেলায় ৩১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৭৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।

এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ঝড়ের সময় বিদ্যুৎ না থাকলে বিকল্প আলোর ব্যবস্থা, বাথরুম ব্যবহারের উপযোগী করা এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

মাঠে থাকা পাকা বোরো ধান ঝড় শুরুর আগেই কেটে ঘরে তোলার জন্য কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাণী সম্পদ বিভাগকে পশু সম্পদ রক্ষায় বিশেষ খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জানান, ঝড় পরবর্তী সময়ে উদ্ধার তৎপরতার জন্য ফায়ার সার্ভিস, সড়ক বিভাগ, এলজিইডি, বিদ্যুৎ বিভাগ ও পল্লী বিদ্যুত বিভাগকে প্রস্তত থাকতে বলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশ্রয় নেওয়া মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও শিশুদের জন্য শিশু খাদ্যের ব্যবস্থাসহ প্রচুর ত্রাণ মজুত রয়েছে। 

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের এর পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে বরিশাল বিভাগের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৫৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রত্যন্ত এলাকায় পূর্বাভাস প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করছে।

সিপিপি’র বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদ জানান,  সিপিপি ঘূর্ণিঝড় শুরুর আগেই মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান এবং অবশ্যই মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।  


ঝালকাঠি

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় দিক নির্দেশনামূলক আলোচনা এবং সাইক্লোন সংক্রান্ত আগাম প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জোহর আলী।

তিনি জানান, আশ্রায়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব মেনে মানুষের থাকার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে নির্দেশনা দেওযা হয়েছে। পাশাপাশি গবাদি পশুও যাতে নিরাপদে আশ্রায় নিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।

পিরোজপুর

আম্পান মোকাবিলায় পিরোজপুরের সাতটি উপজেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৩২ হাজার ২৫০জন আশ্রয় নিতে পারবে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সেখানে লোকজন থাকতে পারে।

সোমবার পিরোজপুরের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় জেলা প্রশাসক আবু আলী সাজ্জাদ হোসেন জানান, দুর্যোগে মানুষ আহত হলে তাদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। তবে অবস্থা বুঝে মেডিক্যাল টিমের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে।

আশ্রয়কেন্দ্র

খুলনা


ঘূর্ণিঝড় আম্পান দেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে এমন খবরের পর সতর্ক অবস্থানের রয়েছেন খুলনার প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬১২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে। আর স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে উপকূলীয় ৪টি উপজেলায় ১০৪টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত ওষুধও মজুত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এ ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানয়েছেন, খুলনায় আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৪৯টি। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে গাদাগাদি করে ৩ লাখ মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার চিন্তা নেই। তাই বিভিন্ন স্কুল-কলেজকেও আশ্রয়কেন্দ্রের তালিকায় নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৬১২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত করা সম্ভব হয়েছে। আরও বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছে।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা প্রদানের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়া জেলা-উপজেলায় পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি এড়াতে রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপিসহ ২ হাজার ৪৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। বিভিন্ন এনজিও’র রয়েছে আরও ১ হাজার ১০০ স্বেচ্ছাসেবক। এরই মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। 
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেছেন, জরুরি সভা করে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মেডিক্যাল টিম গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে হিসাবে প্রতিটি ইউনিয়নে ৩টি করে মেডিক্যাল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টিমে একজন করে দক্ষ চিকিৎসক থাকবেন। যারা ঝড়ের আগে থেকেই এলাকায় সক্রিয় থাকবেন। ঝড় পরবর্তীতে পরিস্থিতি অনুযায়ী সেবা প্রদানে এ টিম সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। ঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়েজনীয় ওষুধ সামগ্রীর জোগান রয়েছে। চিকিৎসা সেবা প্রদানের সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

মোংলা

মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হলেও পৌর শহর এবং শহরতলীর বিভিন্ন এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রগুলো এখনও খোলা হয়নি। কেন্দ্রগুলো খুলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কথা থাকলেও তাতে সোমাবার বিকাল পর্যন্ত তালা ঝুলতে দেখা গেছে। উপজেলার কানাইনগর, চালনা বন্দর মডেল বিদ্যালয়, দিগন্ত প্রকল্প স্কুল, আরাজী মাকোরডোন, চালানা বন্দর ফাজিল মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে ঘুরে চিত্র দেখা গেছে।

তবে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহাত মান্নান দাবি করেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে পৃথক কন্ট্রোল রুম। উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে মোট ১০৩টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের এসব সাইক্লোন শেল্টারগুলোকে পরিষ্কার করে ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদ নদী উত্তাল থাকলেও স্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করছে মোংলাসহ সুন্দরবনসহ আশপাশ উপকূলীয় এলাকা জুড়ে। তবে এ অঞ্চলে প্রচণ্ড গরম ও তাপদাহ বিরাজ করছে।

আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকায় মোংলা বন্দরে পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহনের কাজ চলছে। বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার ফখর উদ্দিন জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে জরুরি কন্ট্রোল রুম খুলেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া অবস্থা বুঝে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।