ভর্তি না নেওয়ায় হাসপাতালের গেটেই সন্তান প্রসবের অভিযোগ

প্রসূতি রাশেদা বেগমগাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে হাসপাতালের গেটেই সন্তান প্রসব করেছেন রাশেদা বেগম নামে এক প্রসূতি। স্বজনদের অভিযোগ, প্রসববেদনা নিয়ে হাসপাতালে আসলে ভর্তি না নিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়।  বর্তমানে নবজাতক সুস্থ থাকলেও রক্তক্ষরণের কারণে প্রসূতি মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।সোমবার (২৫ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটকের নিচে এই ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর পরই প্রসূতির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালের গেটে অবস্থান নেন। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নবীনেওয়াজ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ শাহারিয়া খান বিপ্লব হাসপাতালে আসেন। এ সময় ঘটনা তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন তারা।

প্রসূতি রাশেদা বেগম সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের জামুডাঙ্গা বাঁধের মাথা এলাকার মো. বাদশা মিয়ার স্ত্রী। বাদশা মিয়া স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে মুন্সীগঞ্জের নিমতলা বাজার এলাকায় থেকে দিনমজুরের কাজ করেন। লকডাউন পরিস্থিতির কারণে দুই মাস আগে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি আসেন তিনি।

প্রসূতির স্বজনদের অভিযোগ, ছেলের আশায় চতুর্থবারের মতো গর্ভধারণ করেন রাশেদা। সোমবার বিকালে নিজ বাড়িতে প্রসববেদনায় ছটফট করলে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মিঠুন কুমার বর্মণ, সেবিকা বাসনা রানী ও অফিস সহায়ক শিল্পী রানী ভর্তি না করে তাদের অন্য হাসপাতালে যেতে বলেন। এ সময় করোনার ভয় দেখিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে নিরুপায় হয়ে হাসপাতালের প্রধান গেটে আসার পর পরই সন্তান প্রসব করেন রাশেদা।  হাসপাতালের গেটেই একটি কাপড় পেঁচিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সন্তান প্রসব হয় রাশেদার। অতিরিক্ত রক্তক্ষণে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন রাশেদা। এ ঘটনার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলাকেই দায়ী করেন স্বজনরা। ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেন তারা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে চাননি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মিঠুন কুমার বর্মণ। যদিও পরে তিনি প্রসূতি ওই নারীর নানা জটিলতার কথা বলে নিজের দায় এড়িয়ে যান। এছাড়া অভিযুক্ত সেবিকা বাসনা ও অফিস সহায়ক শিল্পী রানী ঘটনার পর আত্মগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘ওই প্রসূতি নারী বেশি বয়সে গর্ভে সন্তান ধারণ করেন। এতে সন্তান প্রসবে নানা জটিলতা থাকায় তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়ার জন্য স্বজনদের পরামর্শ দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে যাওয়ার পথে গেটে সন্তান প্রসব করেন তিনি। বর্তমানে নবজাতক ছেলে শিশুটি সুস্থ রয়েছে। তবে প্রসূতি মাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’