আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ

101420530_262826488401920_3624464828841590784_n

নাটোরের লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহমুদুল হক মুকুলের বিরদ্ধে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকার সম্পত্তি দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিবাদমান ওই জমিতে আওয়ামী লীগের অফিস নির্মাণের কাজ শুরু করলে উপজেলা প্রশাসন তা বন্ধ করে দিয়েছে।

তবে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, জমিটি তিনি লিজ নিয়েছেন। পার্টি অফিস নয় বরং ওই জমিতে তিনি আধাপাকা ঘর নির্মাণ করতে চান।

ভুক্তভোগী লালপুরের তিলকপুর এলাকার আকছেদ আলীর ছেলে আবুল কালাম জানান, ব্রিটিশ আমলে পুঠিয়া রাজ ট্রাস্ট এস্টেট থেকে তার বাবা ৩৭ শতক জমি ডাক্তারখানা করার জন্য পত্তন পান। জমিটির জেএল নম্বর ১৯৭, খতিয়ান নম্বর ৪ ও দাগ নং ২২৬। সিএস খতিয়ানে জমিটি ৩৭ শতক থাকলেও এসএ খতিয়ানে এসে দাঁড়ায় ১৪ শতক। ওই জমির খাজনা পরিশোধ করে তার বাবা ডাক্তারি পেশার মাধ্যমে এলাকার মানুষদের চিকিৎসাসেবা দিতেন। কিন্তু জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের পর দেশ স্বাধীনের পরবর্তী সময়ে আরএস খতিয়ান হওয়ায় ওই জমি ১ নং খাস খতিয়ানে চলে যায়। এসময় জমিটি ২৭৫ দাগসহ বিভিন্ন খণ্ডে বিভক্ত হয়। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। শুনানি চলার এক পর্যায়ে ২০১৮ সালে আদালত থেকে তাকে জমিটির স্বত্ব সম্বলিত কাগজ দেওয়া হলেও কোনও অজানা কারণে কিছুদিন পর মামলাটি খারিজ করা হয়। কিন্তু জমির স্বত্ব কাগজ থাকায় তিনি মালিক হিসেবে জমিটির দখলে ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ওই মুকুল তার জমিতে পার্টি অফিস করার ঘোষণা দিয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। তিনি বাধা দিতে গেলে মুকুল জানায়, ২০০৮ সালে তিনি ওই জমিটি উপজেলা ভূমি অফিস থেকে লিজ নিয়েছেন। পরে উপজেলা প্রশাসনকে জানালে নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়। জমিটি বর্তমানে ২০ লাখ টাকা শতক। উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার পাশাপাশি বণিক সমিতির সভাপতি হওয়ায় মুকুল প্রভাব বিস্তার করছেন বলেও অভিযোগ তার।

এব্যাপারে জানতে চাইলে মুকুল জানান, ২০০৮ সালে তিনি ওই দাগে ৬৪ বর্গফুট জায়গা ও আরও দুজন সমপরিমাণ জায়গা লিজ নিয়ে খাজনাও পরিশোধ করেন। এরপর আদালতে মামলা খারিজের পর তাকে নবায়ন দেওয়া হয়৷ ২০২৫ সাল পর্যন্ত ওই জমির খাজনা পরিশোধ আছে।

তিনি আরও বলেন, প্রশাসন নিষেধ করায় কাজ বন্ধ রেখে কাজ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন। অনুমতি পেলে কাজ শেষ করবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বাণীন দ্যুতি জানান, অভিযোগ পেয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সার্ভেয়ারকে সরেজমিন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সার্ভেয়ার শাহাদত হোসেন জানান, নির্দেশ পেয়ে তিনি মাপ করেছেন। উভয়পক্ষকে কাগজপত্র আনতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে সব ধরনের নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য বলা হয়েছে।