খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের কর্মসূচি স্থগিত, উৎপাদন শুরু




প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিকদের অবস্থান ধর্মঘটরাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে খুলনায় শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচি মঙ্গলবার (৩০ জুন) রাত ৭টা ৫০ মিনিটে স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরই রাত ৮টা থেকে শ্রমিকরা স্ব স্ব মিলে কাজে যোগদান করেন। এর মধ্য দিয়ে মিলগুলোতে উৎপাদন শুরু হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক সরদার আব্দুল হামিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বেলা ২টা থেকে প্রতিটি পাটকলে শ্রমিকরা অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন শুরু করেন, যা বুধবার (১ জুলাই) বেলা ২টা পর্যন্ত চলার কথা ছিল। কিন্তু বিকালে একটি গোয়েন্দা সংস্থার ঢাকার কর্মকর্তারা খুলনায় আসেন এবং পাটকল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বৈঠকে তারা কর্মসূচি স্থগিতের আহবান জানান। এরআগে, সোমবার ঢাকায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে বৈঠকেও তিনি শ্রমিকদের কর্মসূচি স্থগিত করার আহবান জানান। কিন্তু শ্রমিকরা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নেন। এমন অবস্থায় মিল বন্ধের বিষয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারিভাবে নতুন কোনও ঘোষণা না আসায় রাত পৌণে ৮টা থেকে কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

সরকারিভাবে মিল বন্ধের বিষয়ে আগামীতে কোনও ঘোষণা আসলে শ্রমিকরা রাজপথের আন্দোলনে প্রয়োজনে আত্মাহুতির কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে প্রাণের প্রতিষ্ঠান পাটকল রক্ষা করবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বলেন, একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে খুলনায় মঙ্গলবার বৈঠকের পর রাতে কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এরপরই শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেন। মিল রক্ষার স্বার্থে শ্রমিকরা আগামীতে প্রয়োজন হলে আরও কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

খুলনায় জুটমিলে রাতে কাজ শুরু

প্লাটিনাম জুট মিলের স্থায়ী শ্রমিক ইউনুস তালুকদার বলেন, যে দেশে সরকার লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে ফ্রিতে লালন পালন করেন। বসিয়ে বসিয়ে খাওয়া দাওয়া দিতে পারেন, সে দেশের কয়েক হাজার শ্রমিক বাঁচানোর পরিবর্তে পাটকল বন্ধ করবে এটা হতে পারে না। বালিশ কেলেঙ্কারিতে কোটি টাকার দুর্নীতি হয়, চিকিৎসকদের খাবার বিল হয় কোটি কোটি টাকা। সে দিকে আমলাদের কোনও খেয়াল নেই। আমলাদের শকুন দৃষ্টি পড়েছে অসহায় খেটে খাওয়া সাধারণ পাটকল শ্রমিকদের ওপর। এটা হতে পারে না।

এরআগে, গত ২৭ জুন থেকে পাটকল রক্ষায় আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। ওইদিন সকাল ১০টায় স্ব স্ব মিল গেটে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে রবিবার (২৮ জুন) সংবাদ সম্মেলন ও সোমবার (২৯ জুন) সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত শ্রমিক পরিবারের সন্তানদের রাজপথে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। মঙ্গলবার (৩০ জুন) বেলা ২টা থেকে মিল গেটে এবং মিলের অভ্যন্তরে শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। বুধবার (১ জুলাই) দুপুর ২টা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মিলগেটে তাদের আমরণ অনশন শুরুর কথা ছিল।


আরও পড়ুন:
ধর্মঘটে বসলেও শ্রমিকদের আশা সরকারের সিদ্ধান্ত বদলে দেবেন ‘মানবিক’ প্রধানমন্ত্রী