করোনা উপসর্গ নিয়ে ৪ জেলায় ৭ জনের মৃত্যু

করোনাভাইরাস (গ্রাফিক্স: রাকিব নয়ন)

করোনার উপসর্গ জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট নিয়ে বুধবার (৮ জুলাই) কুমিল্লা, নড়াইল, সাতক্ষীরা ও বগুড়ায় অন্তত ৭ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লাতেই মারা গেছেন ৪ জন। মারা যাওয়া সবার বয়স ৪২ থেকে ৬৫ এর মধ্যে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ:

কুমিল্লায় উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন জন

কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে নতুন করে মারা গেছেন ৪ জন। বুধবার (৮ জুলাই) সকালে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মৃতরা হলেন নাঙ্গলকোট উপজেলার বাতাবাড়িয়া এলাকার রুহুল আমীনের ছেলে শহীদুল ইসলাম (৪২), দেবিদ্বার উপজেলার চুলকশ এলাকার সফর আলীর ছেলে ওয়ারিশ মিয়া (৬০), সদর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকার আরিফুর রহমানের ছেলে মফিজুর রহমান (৫০) এবং হোমনা উপজেলার ছোটগাড় এলাকার সালেহা বেগম (৬৫)।    

মেডিক্যালের করোনা ইউনিটে এ পর্যন্ত উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১০৫ জন।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্র মতে, কুমিল্লা জেলা এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন চার হাজার ৮৬ জন, সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৯৩৮ জন এবং আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১১ জন।

নড়াইলে উপসর্গ নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু

নড়াইল প্রতিনিধি জানান, লোহাগড়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোশারফ হোসেন (৫৩) নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। খবরটি নিশ্চিত করেছেন লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান।

পুলিশ ও মৃতের পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১ জুলাই (বুধবার) তিনি করোনা উপসর্গ জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করতে দিয়ে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গিয়ে হোম আইসোলেশনে ছিলেন।

সোমবার (৬ জুলাই) রাতে উপসর্গ বেড়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

লোহাগড়া উপজলো স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. শাহাবুর রহমান জানান, তার নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান আরও জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোশারফ হোসনের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

সাতক্ষীরায় অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আমজাদ হোসেন (৬৫) নামের এক অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন করোনা উপসর্গ নিয়ে।

বুধবার (৮ জুলাই) সকাল ১০টায় হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের গোলাম সরদারের ছেলে।

সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ভবতোষ কুমার মণ্ডল বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসোলেশনে ভর্তি হন আমজাদ হোসেন। বুধবার সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হবে।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) ইয়াছিন আলম চৌধুরী জানান, তার বাড়িসহ কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করা হবে।

বগুড়ায় উপসর্গ নিয়ে ভ্যানচালকের মৃত্যু

বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বগুড়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে আবুল কালাম (৫০) নামে এক অটোরিকশা ভ্যানচালকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৮ জুলাই) সকাল ৮টায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের আইসোলেশনে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন আইসোলেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

শজিমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, আবুল কালাম বগুড়ার গাবতলী উপজেলার গোলাবাড়ির বাসিন্দা। করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনি বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শজিমেক হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি হন। সকাল ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বগুড়া শাখার সংগঠক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবুল কালামের মরদেহ জীবাণুমুক্ত ও হাসপাতাল চত্বরে জানাজা করা হয়েছে। পরে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ির গোরস্থানে দাফন করা হয়।