তিন স্কুলছাত্রীকে রাতভর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, দুই ধর্ষক গ্রেফতার

ধর্ষণ 
রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে স্কুল পড়ুয়া তিন বান্ধবী। গত ২৯ জুলাই খুলশী আবাসিক এলাকার ৩ নম্বর রোডের ২২ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বুধবার (৫ আগস্ট) ভোর রাতে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে খুলশী থানা পুলিশ। তারা দুইজন সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।

গ্রেফতার দুই যুবক হচ্ছে নোয়াখালীর ধর্মপুর এলাকার কামাল উদ্দিনের ছেলে মো. লিটন (৩৭) ও কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে মো. সোহেল রানা রাজু (২৮)।

তিন স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার দুই ব্যক্তি 

খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ওই তিন কিশোরী গত ২৯ জুলাই বায়েজিদ থানাধীন একটি এলাকায় নিজেদের বাসা থেকে রাগ করে বের হয়। এরপর পালিয়ে নগরীর টাইগারপাসের মামা ভাগ্নের মাজারে চলে আসে। রাত সাড়ে আটটার দিকে টাইগারপাস নিরিবিলি হোটেলের সামনে অজ্ঞাত এক লোকের সঙ্গে তাদের কথা হয়। কথাবার্তার এক পর্যায়ে লোকটি তাদের সঙ্গে ভাব জমায়। লোকটি তাদের অসহায়ত্ব বুঝতে পেরে সুযোগ নেয়। তিন কিশোরী লোকটিকে জানায়, তাদের রাতে কোথাও থাকার জায়গা নেই। লোকটিকে সাহায্য করার অনুরোধ করে। তখন লোকটি মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে। কিছুক্ষণ পর দুজন লোক মোটরসাইকেল যোগে আসে এবং জানায় তাদের ফ্যামিলি বাসায় থাকার জায়গা আছে। তিন কিশোরী সরল বিশ্বাসে মোটরসাইকেল ও সিএনজি যোগে আগত দুইজন লোকসহ খুলশী এলাকার খুলশী আ/এ ৩ রোডের ২২ নম্বর বাড়িতে যায়। রাত ১১টায় সেখানে গেলে বাড়ির দারোয়ান গেট খুলে দিয়ে তাদের নিচে বসতে দেয়। কিছুক্ষণ পর তাদের সকলকে ভেতরের দিকে নিয়ে যায়।

তিনি জানান, বাসার ভেতরে ঢোকার এক পর্যায়ে তিন কিশোরী বুঝতে পারে তারা বিপদে পড়েছে। তবে তাদের আটকে রেখে রাতভর চলে পাশবিক নির্যাতন তথা ধর্ষণ। পরে ভোরবেলায় মেয়েদের বাসায় রেখে মোটরসাইকেল আরোহী দুই ধর্ষক চলে যায়। সকালবেলা বিধ্বস্ত অবস্থায় তিন কিশোরী নিজেদের বাসায় ফিরে গেলে অভিভাবকরা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাদের থানায় নিয়ে আসেন। ঘটনার বিস্তারিত শুনে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। পরে ওই দিনই বাসার দারোয়ান মোহাম্মদ ওমর ফারুক (৪৬) কে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার মোবাইলের কল লিস্ট দেখে বুধবার ভোর রাতে এই দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। আসামি লিটন জানায়, সে একসময় ঘটনাস্থল খুলশীর সেই বাসায় ড্রাইভার হিসেবে নিযুক্ত ছিল। বর্তমানে ওই বাসার মালিক তার পুরো পরিবার নিয়ে বিদেশ চলে যাওয়ায় বাড়িটি একদম ফাঁকা। এই সুযোগে দারোয়ানের সহযোগিতায় ওই বাসায় সে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। বর্তমানে তার নোয়াখালী লাইনে একটি বাস আছে। অপর আসামি রাজু পেশায় শহর এলাকার ৬ নং পরিবহনের ড্রাইভার। তাদেরকে আদালতে পাঠিয়ে ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।