বগুড়ার শহরের মালতিনগর মোল্লাপাড়ার একটি বাড়িতে বিস্ফোরণে আহত সপ্তম শ্রেণি পড়িয়া স্কুল ছাত্রী তাসনিম বুশরা (১৪) মারা গেছে। আহতের ছয় দিনের মাথায় শনিবার (৪ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বগুড়া শহরের মালতিনগর মোল্লাপাড়ার লয়া মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম মাছ, সাটারিং ব্যবসার পাশাপাশি বাড়িতে কিছুটা গোপনে পটকা ও আতশবাজি তৈরি এবং বিক্রি করে থাকেন। তার টিনশেড আধাপাকা বাড়ির তিনটি ঘরে এসব মজুত করা ছিল। গত ২৮ এপ্রিল এশার নামাজের সময় রেজাউল করিম মসজিদে যান। রাত ৯টা দিকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে বাড়ির দুটি ঘর বিধ্বস্ত হয়। ঘরের টিনের চালা উড়ে পাশে গিয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের মাত্রা এত বেশি ছিল যে আরসিসির চিকন বিম ভেঙে ঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।
ওই সময় ঘরে থাকা রেজাউল করিমের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা (৩৮), তার মেয়ে সুমাইয়া আকতার (১৫), ভাই রাশেদুল ইসলামের মেয়ে জিম খাতুন (১৬) ও প্রতিবেশী আলী হোসেনের মেয়ে তানসিম বুশরার (১৪) শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এর মধ্যে জিম, বুশরা ও সুমাইয়াকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুশরার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছিল। সে মালতিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
এ ঘটনায় পরদিন ২৯ এপ্রিল বনানী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম সদর থানায় গৃহকর্তা রেজাউল করিমের (৪২) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠায়। পুলিশ তার বাড়ি থেকে সুতলি পেঁচানো ২৪০ পিস বিস্ফোরক দ্রব্য, বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত ৪০ পিস ছোট ছোট কাগজ, প্যাঁচানো সুতলির পোটলা, একটি ভাঙা টিনের কৌটা এবং মাথা পোড়া গ্যাস সিলিন্ডারের একটি রেগুলেটর উদ্ধার করে।
২৯ এপ্রিল রাতে ডিএমপির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের আট সদস্যের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কিছু আলামত নিয়ে যান।
বগুড়ার বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আলী আশরাফ জানান, বিস্ফোরণে আহত তাসনিম বুশরা ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ছয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে। তার লাশ বগুড়ায় আনা হচ্ছে।