এ বিষয়ে বৈঠক ও আলোচনাও করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাঞ্চলীয় বাসভবন খ্যাত নাটোরের উত্তরা গণভবনে এ বিষয়ে প্রকাশ্য প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। তবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নিহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়নবঞ্চিত জনপদে পরিণত হয় নাটোর। সেই কথা আজও ভুলতে পারেনি নাটোরের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ নাটোরের আপামর জনগণ।
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবার সেই স্বপ্ন ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবেন এমন আশা আজও বুকে লালন করেন নাটোরের আপামর জনগণ।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নাটোর পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি জানান, বঙ্গবন্ধুর কিছু প্রিয় মানুষ ছিলেন নাটোরে। তাদের টানে প্রায়ই ছুটে আসতেন বঙ্গবন্ধু। তাদের একজন ছিল উমা চৌধুরীর বাবা শংকর গোবিন্দ চৌধুরী। বঙ্গবন্ধু তাকে গভর্নর নিযুক্ত করেছিলেন। নাটোরে তার প্রিয় ব্যক্তিত্বদের মধ্যে ছিলেন সাবেক প্রয়াত এমপি সাইফুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা মুজিবুর রহমান রেজা, ছাত্রলীগ নেতা মজিবর রহমান সেন্টু, আওয়ামী লীগের রমজান আলী প্রাং প্রমুখ।
একদিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে উমা চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু আসেন উত্তরা গণভবনে। এসময় বাবা প্রয়াত শংকর গোবিন্দ চৌধুরী তার কাছে যান। সেখানে বঙ্গবন্ধু বাবাকে নিয়ে একাকী হাঁটতে হাঁটতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন উত্তরা গণভবনে। এ সময় এক বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, নাটোর হবে উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র। এসময় তিনি নাটোরে একটি পূর্ণাঙ্গ টিভি সম্প্রচার কেন্দ্র স্থাপনের ঘোষণা দেন। এর কয়েকদিন পরেই নাটোর হরিশপুর ওয়াপ্দা মাঠে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও বঙ্গবন্ধু নাটোরকে কেন্দ্র করে উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন নিয়ে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে পূর্ণাঙ্গ টিভি স্টেশনসহ উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র হতো নাটোর, এমন দাবি করেন উমা চৌধুরী জলি।
নাটোর ও নওগাঁ সংরক্ষিত আসনের এমপি রত্না আহমেদ দাবি করেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে নাটোর হতো সমৃদ্ধ নগরী, দেশের দ্বিতীয় রাজধানী। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দুষ্কৃতকারীরা শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু পরিবার ও আওয়ামী লীগের ক্ষতি করেনি, ক্ষতি করেছে নাটোরের অগ্রযাত্রার। নাটোরের চলনবিল এবং অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, উত্তরা গণভবনকে কেন্দ্র করে নাটোরকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা এবং নাটোরকে কেন্দ্র করে পুরো উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের চিন্তা ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়নের কাজ করছেন, তিনি দেশের সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের নাটোর গড়তেও ভূমিকা পালন করছেন বলে দাবি করেন এমপি রত্না।