সৈয়দপুরে সীমিত পরিসরে আশুরা পালিত

নীলফামারীর সৈয়দপুরে বানানো আশুরার তাজিয়া।


নীলফামারীর সৈয়দপুরে এবার সীমিত আয়োজনে পালন করা হলো কারবালার হৃদয় বিদারক ইতিহাসের স্মৃতি বিজরিত দিবস পবিত্র আশুরা। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে জনসমাগমসহ শোকযাত্রা ও সম্মিলিত মর্সিয়া গীতি অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করায় অনেকটা নীরবেই চলে গেল শিয়া সম্প্রদায়ের অন্যতম বিশেষ দিনটি।





ব্রিটিশ আমল থেকে উর্দুভাষী শিয়া মুসলিমরা সৈয়দপুর শহরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ১০ মুহাররম পবিত্র আশুরা পালন করে থাকে। প্রতি বছরেই মুহাররম মাসের চাঁদ দেখা দিলেই শুরু হয় উৎসব পালনের প্রস্ততি। বিশেষ করে কারবালার শহীদদের স্মরণে শহরে প্রায় ৮৫টি ইমামবাড়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও রঙ করার কাজ শুরু হয়। একইসঙ্গে চলতে থাকে ইমামবাড়ায় স্থাপনের তাজিয়া তৈরি। তবে এবার তাজিয়া তৈরিসহ অন্য আনুষ্ঠানিকতার প্রস্তুতি থাকলেও জেলা প্রশাসনের নির্দেশে গত শনিবার (২৯ আগস্ট) রাতে শহরের ৪৮টি ইমামবাড়ায় তাজিয়া স্থাপন করা হলেও মর্শিয়াগীতির অনুষ্ঠান হয়নি। অন্যান্যবারের মতো এবার তাজিয়া মিছিলও হয়নি সৈয়দপুরে।

সৈয়দপুরের আরেকটি তাজিয়া
রবিবার সন্ধ্যার আগে উপজেলা শহরের হাতিখানা কবরস্থানে প্রতীকি কারবালা প্রান্তর সাজিয়ে অনুষ্ঠিত হয় সমাবেশ। এরপর শহরের পার্বতীপুর সড়কের শিয়া মুসলমানদের আস্তানা ‘আঞ্জুমানে আব্বাসিয়া জামে মসজিদ’ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় সীমিত পরিসরে মাতম অনুষ্ঠান। এখানেও প্রতীকি কারবালা প্রান্তরেরও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় সামান্য লোকের উপস্থিতিতে।
শিয়া মুলমানদের আঞ্জুমান কমিটির সভাপতি মো. মোস্তাক হোসেন বলেন, প্রতি বছর এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্দা, খুলনা, ইশ্বরদীসহ ঢাকা ও চট্টগ্রামের ইমাম হোসেন প্রেমী ভক্তরা সমাবেত হন এখানে। এটি আমাদের একটি অন্যতম দিবস। কিন্ত এবার সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় অনেকেই আসতে পারেননি।

মাতম অনুষ্ঠান। তবে এবার সশস্ত্র হওয়া ছিল নিষিদ্ধ।
সাধারণ সম্পাদক মো. আলতাব হোসেন বলেন, করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে মাতমকারীদের উপস্থিতি ছিল আগের মতোই। তবে এবার শহরের অর্ধেক ইমামবাড়ায় তাজিয়া স্থাপিত হয়েছে। অন্যান্য আয়োজন ছিল সীমিত।
সৈয়দপুর থানার ওসি আবুল হাসনাত খান জানান, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইমামবাড়াগুলোতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হয়। তবে অনুষ্ঠানস্থলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, মল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি বহন এবং আতশবাজি ও পটকা ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়।

তাজিয়ার মূল অনুষ্ঠান দেখতে ভিড়
শান্তিপূর্ণভাবে আশুরা পালনে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসাহের সঙ্গে আশুরা পালন করেছে সৈয়দপুরবাসী।