কাজি বেলাল জালিয়াতি করা সার্টিফিকেট দাখিল করে আইন মন্ত্রণালয় থেকে নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজীর) লাইসেন্স বাগিয়ে নেন। এ নিয়ে রাণীনগর থানায় একটি মামলা হওয়ার পর (মামলা নম্বর-৬, তারিখ ২২-০২-২০০৫, ধারা-৪৬৬/৪৬৭/৪৭১/৪২০/৩৪ দণ্ডবিধি) চার্জশিট দাখিল হয়। কিন্তু সেই মামলা আলোর মুখ দেখেনি।
জানা যায়, রাণীনগর উপজেলার ৫ নম্বর বড়গাছা ইউনিয়নের গহেলাপুর গ্রামের নাজিম উদ্দীনের ছেলে মো. বেলাল হোসেন। রাণীনগর আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসা থেকে পাসের সনদ অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৮৪ সাল।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, আল-আমিন মাদ্রাসার রেকর্ডপত্র অনুসারে বেলাল হোসেনের জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৮৪। কিন্তু জন্মের আগেই ১৯৮৩ সালে দাখিল ও জন্মের এক বছর পর ১৯৮৫ সালে আলিম পাস করার সদনপত্র দাখিল করে কাজির লাইসেন্স নেন তিনি। আর এই কাজে বেলাল হোসেন তার শিক্ষক বেলাল উদ্দিনের সনদনপত্র ব্যবহার করেন।
এ ঘটনায় রাণীনগর থানায় একটি মামলা হয়। রাণীনগর থানার তৎকালীন ওসি সৈয়দ মোহসিনুল হক স্বাক্ষরিত ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৫ সালে প্রতিবেদন চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট বেলালের দাখিলকৃত (দাখিল ও আলিম পরীক্ষার) সনদসহ প্রতিবেদন চেয়ে পত্র দেন। পরবর্তীতে সেই মামলায় চার্জশিটও দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় আইন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জিয়া উদ্দিন মাহমুদ স্বাক্ষরিত (স্মারক নম্বর-বিচার-৭/২এন-৬৯/২০০২-৫৭২ ,তারিখ: ১৪-১১-২০০৭) পত্রে তৎকালীন নওগাঁ জেলা রেজিস্ট্রার মো. জহির উদ্দীনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়। সে মোতাবেক মো. বেলাল হোসেনকে ২ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল সার্টিফিকেটসহ স্ব-শরীরে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ধরা পড়ার ভয়ে মূল সার্টিফিকেট নিয়ে হাজির না হয়ে কৌশলে পদত্যাগপত্র দিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রারের (কাজী) পদ থেকে অব্যাহতি নেন বেলাল হোসেন।
আল আমিন দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার হারুনুর রশিদ বলেন, ২০০০ সালের দিকে আমি ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলাম। বেলাল হোসেন ২০০০ সালে আমার মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে ফেল করে। এরপর সে কোথায় লেখাপড়া করেছে তা আমার জানা নেই।
তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, আমার সব সনদপত্র সঠিক আছে। দাখিল ও আলিম পাসের সনদপত্র জালিয়াতির যে অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে উঠেছে তা সঠিক নয়। আমার সম্মানহানির জন্য মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে।